বাংলাদেশে জামাতে ইসলামীর অবস্থা কেমন।
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মাদ মিজান ১৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:৫১:১৩ সকাল
আমার ওয়ার্কিং পিরিয়ড সকাল আটটা থেকে রাত দশটা।
এই চৌদ্দ ঘন্টা আমি একটা কেবিনের ভেতরে একা থাকি।কেউ বিরক্ত করার নাই কোনো ব্যস্ততা নাই।খুবই নিরিবিলি। তাই এই সময়টায় ইন্টারনেট আমার পরম সাথী।
4G নেটওয়ার্ক সাথে সনি এক্সপেরিয়া জেড ২ মজাই আলাদা।
স্টাডি করার জন্য একখান স্যামসং নোট ৮ ও আছে।
এই বিস্তর সময়ে আমি প্রায়ই ঢুঁ মারি
ভিন্ন ভিন্ন মতের বিভিন্ন লোকের ফেবু প্রফাইলে।অনেক কিছু জানা যায়।
অনেক সময় ইচ্ছাকৃত তর্কেও লিপ্ত হই।
যেমন নাস্তিক,ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী,
জাতীয়তাবাদী, তাবলীগ,ক্বওমী,পীর মুরীদ, মাজার পুজারী, আহলে হাদিস,মাজহাবী, লা-মাজহাবী,জেহাদী সহ ইসলামী বিভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের প্রফাইলে বিচরণ করি।
তবে সিরিয়াস কিছু বলি না বেশি বুঝাইতেও যাইনা।ব্লক খাওয়ার আগে ব্যাক করি।
নাস্তিকেরা স্রষ্টা আছে এটা বিশ্বাস করে না।ওরা ধর্ম বিদ্যেষী হলেও মূলত ওরা ইসলাম বিদ্যেষী। আর বাংলাদেশে ওদের আদর্শ বাস্তবায়নের পথে জামাত শিবিরকেই ওরা প্রধান প্রতিবন্ধক মনে করে।ইসলামের অন্যান্য দলগুলোর ব্যাপারে ওদের তেমন মাথা ব্যাথা নাই।
ওদের মেইন টার্গেটে জামাত শিবির।
নাস্তিকদের পরের স্থানেই আছে সেক্যুলার বা ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীরা।
পরের স্থানে হলেও এরা একে অপরের সহযোগী। এরা নিরপেক্ষতার শ্লোগান দিলেও মূলত এরা ইসলাম বিরোধী শক্তির পক্ষে।নাস্তিকদের চেয়ে এই সেক্যুলারদের দ্বারা ইসলামের বেশি সর্বনাশ হচ্ছে।
বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্বে জামাত শিবিরের মত সুগঠিত ইসলামী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধেই এদের অবস্থান।
জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসীরা একটু ইসলাম ঘেষা ভাব নিয়ে চলে।
মূলত ইসলাম আঞ্চলিক জাতীয়তা সমর্থন করে না,ইসলাম কেবল মুসলিম জাতীয়তার কথা বলে।
এরা আসলে ক্ষমতা লোভী। ক্ষমতার জন্য এরা এক সাথে আন্দোলন করলেও সুবিধাজনক অবস্থান পেলেই এরা চোখ পাল্টি দিতে দেরি করে না।এরাও জামাত শিবিরের যথেষ্ট বিরোধী।
ইসলামী আন্দোলনের নামে পীর মুরীদি ব্যবসার সাথে যারা রাজনীতির ব্যবসাও করছে তাদের মূল আন্দোলনই হলো জামাত ঠেকাও নাহলে ব্যবসায়ে লালবাতি জ্বলবে।
তাদের শিক্ষাই হলো জামাতের বিশাল সাহিত্যভান্ডার থেকে বক্তব্য বিকৃত করে বিদ্বেষ ছড়ানো।এমনকি এদের পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার প্রশ্নও করা হয় জামাতকে সমালচনা করে।এরা ফাসাদ সৃষ্টিকারী ধর্মব্যবসায়ী।এরা ইসলাম বিকৃত করে পীর প্রথার নামে ব্যক্তি পুজার মচ্ছব করে ও মানুষদেরকে গোঁয়ার বানায়। মুসলিম মিল্লাতের জন্য এরা সাংঘাতিক ক্ষতিকর।
শিরকী,বেদাতি ও মাজার পুজারীদের ব্যাপারে সবাই জানে যে তাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে জামাত শিবির ও জাকির নায়েকের কারনে।এজন্যই মাজার ব্যবসায়ীরা ইসলামের প্রকাশ্য শত্রুদের সাথে মিশে জামাত শিবিরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও কঠিন বিরীধিতায় লিপ্ত।
তাবলীগের কথা আর আলাদা ভাবে বলবোনা এটা ক্বওমীদের সাথে আসবে।ক্বওমী ঘরানায় কোরআন হাদিস কেবল পড়ানো হয় একনিষ্ঠভাবে,কিন্তু এর উপরে কোনো গবেষণা হয়না।ফলে ইসলাম যে সর্বাধুনিক তা এরা বুঝতে ব্যার্থ হয়,যুগজিজ্ঞাসার জবাব দিতে তারা সংকীর্ণতায় ভোগে।
পাকিস্তান পিরিয়ডে একবার কায়েদে আযম মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ ততকালীন পূর্বপাকিস্তানের আল্লামা শামছুল হক্ব ফরিদপুরী রহঃ সহ গোটা পাকিস্তানের বড় বড় আলেমদেরকে নিয়ে মিটিং করে তাদের কাছে ইসলামী রাষ্ট্রের সংবিধান চাইলে তারা সময় নিলেন।বেশ কতদিন আলেমরা
মজলিশ করে করে শুধু পান চিবাইলেন কোনো সংবিধান পেশ করতে পারলেন না।ফাইনালি কায়দে আযম আবার মিটিং ডেকে বল্লেন আপনাদের দ্বারা গোল বালিশ পাশে নিয়ে কেবল পান খাওয়াই হবে,রাষ্ট্র পরিচালনা হবে না।
এরা শুধু শুনে শুনে জানে যে কম্যুনিজম ইসলাম বিরোধী। আসলে এটা কেন খারাব কি মতবাদ এদের তা ওরা কোনোদিন পড়ে দেখেনি।
একইভাবে জামাতের সাহিত্যও এরা পড়ে দেখে না।কোন স্বার্থান্বেষী মহল কি কারনে জামাতের বিরীধিতা করে গেছে, আজও চিলে কান নেওয়ার মত তার পেছনে ছুটছে।বুজুর্গ পরস্তি করেই ছলেছে অন্ধ ভাবে,সত্য জানার চেষ্টাই করেনি।
ক্বওমীর জাদরেল অনেক আলেমদের সাথে আমার কথা হয়েছে।তাদের কথা হলো সত্য প্রকাশ করে হুসাইন আহমদ মাদানীর রহঃ সাথে তারা দ্বিমত করতে চায় না।অনেকে চুপ থাকে এই ভয়ে যে যদি কিছু বলি তাহলে আমি ক্বওমীদের মধ্যে এক ঘরে হয়ে যাবো।এই হলো তাদের মানষিকতা।
মোটের উপর যা দেখা যাচ্ছে তা হলো একমাত্র জামাতে ইসলামীই ইসলামকে সর্বাধুনিক ভাবে উপস্থাপন করে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটা সেক্টরে আন্দোলন করে যাচ্ছে ইসলামী হুকুমাত কায়েমের লক্ষে।
আর ইসলাম বিরোধী দল গুলো ও ইসলামের নামে অসম্পূর্ণ দলগুলো জামাতের বিরোধিতা করে চলছে কখনও একসাথে কখনও বিচ্ছিন্ন ভাবে।
বিষয়: বিবিধ
১৮৬৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
স্বীয় জানার পরিধি জাহির করতে গিয়ে 'সময়-সুযোগ ও মাধ্যমতা'র বাহুল্য আলোচনা
অসাধারণ সুন্দর লেখনী কে ফ্যাকাশে করে দিয়েছে।
সুচনার বক্তব্যে লেখনীর গ্রহনযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করবে...।
যুক্তিময় উপস্হাপনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ.....
পাকিস্তান পিরিয়ডে একবার কায়েদে আযম মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ ততকালীন পূর্বপাকিস্তানের আল্লামা শামছুল হক্ব ফরিদপুরী রহঃ সহ গোটা পাকিস্তানের বড় বড় আলেমদেরকে নিয়ে মিটিং করে তাদের কাছে ইসলামী রাষ্ট্রের সংবিধান চাইলে তারা সময় নিলেন।বেশ কতদিন আলেমরা
মজলিশ করে করে শুধু পান চিবাইলেন কোনো সংবিধান পেশ করতে পারলেন না।ফাইনালি কায়দে আযম আবার মিটিং ডেকে বল্লেন আপনাদের দ্বারা গোল বালিশ পাশে নিয়ে কেবল পান খাওয়াই হবে,রাষ্ট্র পরিচালনা হবে না।
আশা করি এই কথাটির ব্যাপারে আরেকটু নিশ্চিত করবেন। আবার ধন্যবাদ।
সুন্দর আলোচনা-
যদিও পোস্টের শুরু থেকে "ব্লক খাওয়ার আগে ব্যাক করি" পর্যন্ত অংশটুকু পাঠককে কষ্ট দেয়!
যাহোক, পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রের ব্যাপারে উলামায়ে কিরামের অবদান প্রসংগে আমি তো জানি যে-
ঐ সময় সমস্ত ফিরকার উলামায়ে কিরাম [মাওলানা মওদুদী রাহঃসহ] একসাথে বসে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রের খসড়া তৈরী করে দিয়েছিলেন, কিন্তু শাসকবর্গ তা বাস্তবায়ন করেনি (তেমন ইচ্ছাই কখনো ছিল বলে জানা যায়নি)!
@ মুহাম্মাদ মিজান: আপনার বক্তব্যের দলিল পারা অপেক্ষায় রইলাম
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকুমুল্লাহ
আপনার পর্যালোচনাটা খুবই চমতকার হয়েছে। তবে
আলেমরা একমত হয়েই শাসনতন্ত্র রচনা করেছিল। এই বিষয়টা একটু আবার দেখে নেবেন।
আপনাকে ধন্যবাদ।
মজলিশ করে করে শুধু পান চিবাইলেন কোনো সংবিধান পেশ করতে পারলেন না।ফাইনালি কায়দে আযম আবার মিটিং ডেকে বল্লেন আপনাদের দ্বারা গোল বালিশ পাশে নিয়ে কেবল পান খাওয়াই হবে,রাষ্ট্র পরিচালনা হবে না।"
পাকিস্তান কায়েম হয়েছিল শুধুমাত্র ইসলামী হুকুমাত কায়েমের লক্ষ্যে৷ অনেক চিন্তা করেও কায়েম না হওয়ায় জিন্না সাহেববকে অজান্তে অনেক দোষারোপও করেছি৷ আসল কারণটা আজকে জানলাম৷ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ৷
মন্তব্য করতে লগইন করুন