সিলেটে চামড়া ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায়, পাঁচারের অভিযোগ

লিখেছেন লিখেছেন মো নজরুল ইসলাম ১০ অক্টোবর, ২০১৪, ০১:০৫:৩৩ রাত





মো. নজরুল ইসলাম :: চামড়া দেশের জাতীয় সম্পদ। প্রতি বছর কুরবানীর ঈদে পশুর চামড়া রপ্তানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে বাংলাদেশ। সোমবার পালিত হলো পবিত্র ঈদুল আজহা। এ কুরবানীর ঈদে অন্যান্য বছরের তুলনায় শেষ মুহুর্তে গরুর দাম কমে যায়। চামড়া ব্যবসায়ীদের হিসেবে সিলেটে এবছর ৬৫হাজার থেকে ৭০হাজার কুরবানী দেয়া হয়েছে। সে হিসেবে চামড়া সংগ্রহ হয়নি তাঁদের। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কারনে চামড়া সংগ্রহে পিছিয়ে পরেছেন স্থায়ী ব্যসায়ীরা। আর সরকারের নির্ধারিত দামের তুলনায় বেশি দামে চামড়া কিনতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা।

এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি ফুট চামড়ার মূল্য- বড় গরু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মহিষ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ছাগল ২৫ থেকে ৩০টাকা আর খাসি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা কিনেছেন পিছ হিসেবে।

নগরীর দক্ষিণ সুরমা ঝালোপাড়ার জালালাবাদ লেদার হাউসের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, আমরা গরু চামড়া দেখলে ফুট হিসেব করতে পারি। কাঁচা বড় গরুর চামড়া তিন হাজার থেকে বত্রিশ’শ টাকা, মাঝারি সাইজের চামড়া পনের’শ থেকে সতের’শ এবং ছোট গরুর চামড়া এক হাজার থেকে বার’শ টাকায় কিনছি। ফুটের হিসেবে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে এসব চামড়ায় প্রতি ফুটের মূল্য পরেছে আশি থেকে পচানব্বই টাকা। এ পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজার পিছ চামড়া সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

জালালাবাদ লেদার হাউসের হিসাব রক্ষক কয়েস আহমদ জানান, গরু বিক্রি করতে আসা উত্তর বঙ্গের ব্যবসায়ীরা গরু বিক্রি করে যাওয়ার সময় প্রভাবশালীদের সহায়তায় অনেক চামড়া বাইরে নিয়ে গেছে। তাই চামড়ার সংগ্রহ গত বছরের তুলনায় কম হয়েছে।

চামড়া ব্যবসায়ী শাহজালাল এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী বাদশা আহমদ জানান, চামড়া ব্যবসায় তিন নম্বরে থাকা সিলেটে এবার আমদানি কম। অন্যান্য বছরের তুলনায় মৌসমী ব্যবসায়ী, পাচারকারী ও অভিজ্ঞতাহীন ব্যবসায়ীদের কারনে পচানব্বই থেকে এক’শ টাকায় চামড়া কিনতে হয়েছে।

তিনি আরো জানান, প্রক্রিয়াজাত করণে প্রতিটি কাঁচা চামড়ায় খরচ হচ্ছে দশ থেকে পনের টাকা। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে লেবারের খরচও বেশি। প্রতি জনকে দিতে হচ্ছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা এখন দুশ্চিন্তায় আছেন।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেমন সহায়তা পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত আমার ব্যবসা এলাকায় পুলিশের কেউ আসেননি।

শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ শামীম আহমদ জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০% কম চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে। ৭০% লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও ৩০% বাইরে চলে গেছে। দেশের বাইরে পাচার হওয়ার ফলে এমনটা হয়েছে বলে তিনি জানান। আর প্রক্রিয়াজাত করণে প্রতিটি চামড়ায় খরচ পরছে দুই’শ টাকা।

এদিকে ঝালোপাড়ার চামড়ার আড়ৎগুলো ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা দিন-রাত পরিশ্রম করে চামড়া থেকে মাংস সড়ানো ও লবণ প্রয়োগ করে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করছে। দূর-দুরান্ত থেকে এখনো চামড়া আসতেছে। আগামী এক সপ্তাহ এগুলো প্রক্রিয়াজাত করণ করে ঢাকায় টেনারী ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করবেন তাঁরা। তথদিন পর্যন্ত সঠিক মুনাফা পাবেন কি, না এমন সঙ্কার মধ্যে কাটবে চামড়া ব্যবসায়ীদের দিন।

বিষয়: বিবিধ

১১২২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

272783
১০ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:৪৬
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : এটা কিন্তু ভালো খবর নয়। Shame On You
274429
১৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:১২
সায়েম আহমেদ লিখেছেন : কংগ্রাচুলেশন
১৬ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৫৮
218865
মো নজরুল ইসলাম লিখেছেন : ধন্যবাদ সায়েম
275574
১৮ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৩৭
মো নজরুল ইসলাম লিখেছেন : হ্যা, এটা ভালো খবর না। @শিশির ভেজা ভোর

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File