মশীহে দাজ্জাল বিষয়ক সহীহ হাদিস সমূহ

লিখেছেন লিখেছেন sAyEEdXP ০৫ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:৫৮:৩৬ রাত

আসসালামু আলাইকুম

সূপ্রিয় দীনি বন্ধুরাঃ

আমি এই অধ্যায়ে "মশীহে দাজ্জাল" সংক্রান্ত কিছু সহীহ হাদীস সংগ্রহ করে তা আপনাদের জানার জন্য উপস্থাপন করলাম। তাই এই বিষয়ে যদি আপনাদের সহীহ হাদীস সংগ্রহে থাকে তাহলে দয়া করে সেগুলো আমার এই কলামে মন্তব্য হিসাবে পোস্ট করলে বাধিত হবো।

(১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ এক চোখ বিশিষ্ট নন। কিন্তু মশীহে দাজ্জালের ডান চোখ কানা, তার চোখ হবে আঙ্গুরের দানার মত ফুলা। ***ইমাম বুখারী ও ইমম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(২) আনাস (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেনঃ রাসূল (সাঃ) বলেছেন, প্রত্যেক নবী তার উম্মতকে কানা মিথ্যাবাদী (দাজ্জাল) সম্পর্কে সাবধান করেছেন। সাবধান! সে কানা। তোমাদের মহান ও শক্তিমান প্রভু কানা নন। সেই কানা মিথ্যাবাদী দাজ্জালের কপালে কাফ, ফা ও রা লেখা থাকবে (কাফীর)। ***ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(৩) আনাস (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ মক্কা-মদিনা ব্যতীত এমন কোনও জনপদ অবশিষ্ট থাকবে না যা দাজ্জাল পদদলিত করবে না। এ দুই পবিত্র নগরীর প্রতিটি প্রবেশ পথে ফেরেশতারা কাতারবন্দী হয়ে পাহারা দেবে। দাজ্জাল 'সাবখাহ' নামক স্থানে এসে পৌছলে মদিনাতে তিনবার ভূমিকম্প হবে। এভাবে আল্লাহ সমস্ত কাফীর ও মুনাফিকদের মদিনা থেকে বের করে দিবেন। ***ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(৪) আনাস (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল (সাঃ) বলেছেন, সবুজ চাদর পরিহিত ইসফাহানের সত্তর হাজার ইহুদি দাজ্জালের সাথে যোগ দেবে।

***ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(৫) উম্মু সারিক (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি নবী করিম (সাঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ দাজ্জালের ভয়ে মানুষ অবশ্যই পাহাড়-পর্বতে পলায়ন করবে।

***ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(৬) ইমরান ইবনে হুসাইন (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ আদম(আঃ)-এর জন্ম থেকে কিয়ামত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দাজ্জালের অনাচারের চেয়ে অধিক অনাচার আর হবে না।

***ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(৭) আবু হুরায়রা (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ মুসলিমরা ইহুদীদের সাথে যুদ্ধ না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। অবশেষে পরাজিত হয়ে ইহুদীরা মুসলিমদের ভয়ে পাথর ও গাছের আড়ালে আত্ত্বগোপন করবে। কিন্তু গাছ ও পাথর বলে উঠবে, হে মুসলিম! এখানে ইহুদি আমার পিছনে লুকিয়ে আছে। আস, একে হত্যা কর। কিন্তু 'গারকাদ' নামক গাছ তা বলবে না। কেননা ঐটা ইহুদীদের গাছ। [উল্লেখ্য যে, 'গারকাদ' এক প্রকার কাটাযুক্ত গাছ, বাইতুল মুকাদদাস এলাকায় দেখা যায়]। ***ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(৮) আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ আমার উম্মতের মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং চল্লিশ পর্যন্ত অবস্থান করবে। বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সাঃ) চল্লিশ দিন, না চল্লিশ মাস, না চল্লিশ বছর বলেছেন তা আমার মনে নেই। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ)-কে পাঠাবেন। তিনি দাজ্জালকে খুজে বের করে হত্যা করবেন। অতঃপর লোকেরা সাত বছর এমনভাবে কাটাবে যে দু'জন লোকের মধ্যেও কোনও শত্রুতা থাকবে না। মহান ও সর্ব শক্তিমান আল্লাহ সিরিয়ার দিক থেকে একটি শীতল বাতাস প্রবাহিত করবেন। ফলে পৃথিবীর বুকে এমন কোনও ব্যাক্তি অবশিষ্ট থাকবে না যার মধ্যে সামান্য পরিমাণ সৎ কাজের আগ্রহ বা ঈমান আছে, বরং এ ধরনের সব লোকের রুহ কবজ করে নেওয়া হবে। এরপর শুধু দুস্কৃতিকরিরাই জীবিত থাকবে। তারা যৌনতা ও কুপ্রবৃত্তির বেলায় পাখীর মত এবং জুলুম অত্যাচার-এর বেলায় হিংস্র জন্তুর মত হবে। তারা ভাল কাজ বলতে কিছুই জানবে না এবং খারাপ কাজ বলতে কোনটাই না করে ছাড়বে না। শয়তান মানুষের বেশ ধরে তাদের কাছে এসে বলবে, তোমরা কী আমার কথা মানবে? তারা বলবে, তুমি আমাদের কী কাজ করতে বল? শয়তান তাদের মূর্তি পূজার হুকুম দেবে| মূর্তিপুজা চলাকালে তাদের খাদ্যদ্রব্যের প্রাচুর্জ্য চলতে থাকবে; জীবনটা অত্যন্ত বিলাসী ও আনন্দ-উল্লাসময় হবে। অতঃপর, সিংগায় ফু' দেয়া হবে। যে ব্যাক্তি শিঙ্গার আওয়াজ শুনতে পাবে, সে ঘাড় বাকিয়ে সেদিকে তাকাবে এবং ঘাড় উঠাবে। সর্বপ্রথম যে ব্যাক্তি আওয়াজ শুনতে পাবে, সে তখন তার উটের পানির চৌবাচ্চা পরিস্কার করতে থাকবে। সে বেহুস হয়ে পড়বে এবং তার আশেপাশের লোকজনও বেহুস হয়ে যাবে। এরপর আল্লাহ শিশির বিন্দুর ন্যায় বৃষ্টি পাঠাবেন। অথবা তিনি বলেছেন, মুশলধারে বৃষ্টি নাযিল করবেন। এর দ্বারা মানুষের শরীর গঠিত হয়ে উঠবে। অতঃপর, দ্বিতীয়বার সিংগায় ফু' দেয়া হবে এবং তখন সমস্ত মানুষ উঠে দাড়িয়ে চারিদিকে দেখতে থাকবে। তখন বলা হবে, হে মানুষেরা! তোমাদের প্রভুর কাছে এস। এরপর (হুকুম দেয়া হবে), তাদেরকে দাড় করাও। কেননা তাদেরকে পুংখানুপূংখরূপে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর বলা হবে, এদের মধ্য থেকে জাহান্নামের অংশটা বের করে ফেল। বলা হবে, কত সংখ্যক? বলা হবে, প্রতি হাজারে নয় শত নিরানব্বই জন। এটাই সেই দিন, যেদিন তরুণ বৃদ্ধ হয়ে যাবে, যেদিন সব কিছু স্পষ্ট করে তুলে ধরা হবে।

***ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(৯) আবু হুরায়রা (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে এমন কথা বলবনা, যা সম্পর্কে অন্য কোনও নবী তার উম্মতকে বলেননি? সে হবে কানা এবং তার সাথে থাকবে জাহান্নামের মত একটি এবং জান্নাতের মত একটি জিনিস। সে যেটাকে জান্নাত বলে পরিচয় দিবে সেটা হবে প্রকৃতপক্ষে জাহান্নাম এবং তেমনি ভাবে তার সাথে থাকা জাহান্নামটি হবে প্রকৃতপক্ষে জান্নাত।***ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(১০) মুগীরা ইবনে স'বা (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, দাজ্জালের ব্যাপারে আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে যত বেশী প্রশ্ন করেছি, অন্য কেউ ততটা জিজ্ঞেস করেনি। তিনি আমাকে বলেছেন, সে আমার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। আমি বললামঃ লোকেরা বলে যে, তার সাথে রুটির পাহাড় ও ঝর্ণা থাকবে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ'র কাছে এটি মামুলি ব্যাপার।

***ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(১১) রিব'ই ইবনে হীরাস (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেন, আমি আবু মাসুউদ আনসারী (রাদিঃ)-এর সাথে হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাদিঃ)-এর কাছে গেলাম। আবু মাসুউদ আনসারী (রাদিঃ)তাকে বললেন, আপনি দাজ্জাল সমন্ধে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কাছে যা শুনেছেন তা আমাকে বলুন। তিনি বললেন, দাজ্জালের আবির্ভাব হবে এবং তার সাথে পানি ও আগুন থাকবে। কিন্তু লোকের যে পানি দেখবে তা আসলে জলন্ত আগুন। আর লোকেরা যে আগুন দেখবে তা আসলে সুপেয ঠান্ডা পানি। তোমাদের মধ্যে যে লোক সুযোগ পাবে সে যেন তার কাছে যে দিকটা আগুন মনে হবে সে দিকে ঢুকে পড়ে। কেননা তা হবে প্রকৃতপক্ষে সুপেয পানি। এ হাদীস শুনে আবু মাসুউদ আনসারী (রাদিঃ) বললেন, আমিও মহানবী (সাঃ)-এর কাছ থেকে একথা শুনেছি।

***ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

(১২) আবু সায়ীদ আল খুদরী (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাঃ) বলেছেনঃ দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করলে ঈমানদার লোকদের মধ্যে এক ব্যাক্তি তার কাছে যাবে। তার সাথে দাজ্জালের প্রহরীদের সাক্ষাত হবে। তারা তাকে বলবে, কোথায় যেতে চাও? সে বলবে, আমি আবির্ভূত ব্যক্তির কাছে যেতে চাই। প্রহরীরা বলবে, আমাদের প্রভুর প্রতি কী তোমার ঈমান নেই? সে বলবে, আমাদের প্রভুর ব্যাপারে তো কোনরূপ গোপনীয়তা নেই। তারা বলবে, একে হত্যা কর। কিন্তু এদের কতক লোক কতককে বলবে, তোমাদের প্রভু কী তোমাদেরকে তার অনুমতি ছাড়া কোনও লোককে হত্যা করতে নিষেধ করেনি? তাই তারা তাকে দাজ্জালের কাছে নিয়ে যাবে। মুমিন ব্যক্তিটি দাজ্জালকে দেখে বলবে, হে লোকেরা! এ তো সেই দাজ্জাল, যার প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলে গেছেন। অতঃপর দাজ্জালের হুকুমে তার দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। তার পেট ও পিঠ উন্মুক্ত করে পিটান হবে আর সে বলবে, তুমি কী আমার প্রতি ঈমান পোষণ কর না? মুমিন ব্যাক্তি বলবে, তুমিই সেই মিথ্যাবাদী মসীহ দাজ্জাল। অতঃপর তার নির্দেশে মুমিন ব্যক্তির মাথার সিথি থেকে দুই পায়ের মধ্য পর্যন্ত করাত দিয়ে চিড়ে দ্বিখণ্ডিত করা হবে। দাজ্জাল তার দেহের এই দুই অংশের মধ্য দিয়ে এদিক থেকে ওদিক হেটে যাবে। অতঃপর সে মুমিন ব্যক্তির দেহকে সম্বোন্ধন করে বলবে, পূর্বের মত হয়ে যাও। তখন সে আবার পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে দাড়িয়ে যাবে। আবার সে বলবে, এখন কী তুমি আমার প্রতি ঈমান পোষণ কর? মুমিন লোকটি বলবে, তোমার সম্পর্কে এখন আমি আরও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ করলাম। সে লোকদেরকে ডেকে বলবে, হে লোক সকল! আমার পর এ আর কারও কিছু করতে পারবে না। দাজ্জাল পুনরায় তাকে ধরে হত্যা করতে চাইবে। কিন্তু আল্লাহ তার ঘাড়কে গলার নীচের হাড় পর্যন্ত পিতলে মুড়িয়ে দিবেন। ফলে সে আর তাকে হত্যা করার কোনও উপায় পাবে না। বাধ্য হয়ে দাজ্জাল তার হাত-পা ধরে ছুড়ে ফেলে দিবে। লোকেরা ধারনা করবে দাজ্জাল তাকে আগুনে নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে জান্নাতে নিক্ষিপ্ত হবে। রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ এই ব্যাক্তি বিশ্ব জাহানের রব আল্লাহ'র কাছে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত স্তরের শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।

***হাদীসটি ইমাম মুসলিম সংগ্রহ করেছেন।

(১৩) নাওয়াস ইবনে সামা'আন (রাদিঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল (সাঃ) দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি বিষয়টিকে কখনও নীচু স্বরে ও কখনও উচ্চ কন্ঠে প্রকাশ করলেন। এমনকি আমাদের ধারনা হল যে, দাজ্জাল ঐ খেজুর বাগানের কোথাও লুকিয়ে আছে। যখন আমরা তার কাছ থেকে ফিরে যাচ্ছিলাম তখন তিনি আমাদের অবস্থা বুঝে ফেললেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমাদের কী হয়েছে? আমরা বললাম, হে আল্লাহ'র রাসূল! আপনি এই সকাল বেলা দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। আপনি কখনও নিম্নস্বরে এবং কখনও তা উচ্চস্বরে প্রকাশ করেছেন। এতে আমাদের ধারনা হয়েছে যে, সে ঐ খেজুর বাগানের কোথাও লুকিয়ে আছে। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের ব্যাপারে আমি দাজ্জালের ফিতনার খুব একটা আসা করিনা। যদি আমি বর্তমান থাকতে তার আবির্ভাব ঘটে তবে আমি নিজে তোমাদের পক্ষ হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হব। আর যদি আমার অবর্তমানে তার আবির্ভাব ঘটে তবে প্রত্যেক ব্যাক্তি তার বিরুদ্ধে দাড়াবে। আল্লাহ আমার অবর্তমানে প্রত্যেক মুসলিমের রক্ষক। দাজ্জাল ছোট কোকড়ানো চুল বিশিষ্ট্য যুবক। তার চোখ হবে ফুলা। আমি তাকে আব্দুল উজ্জা ইবনে কাতান সদৃশ মনে করি। তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তি তার সাক্ষাত পাবে সে যেন সূরা আল-কাহফ-এর প্রাথমিক আয়াতগুলো পাঠ করে। দাজ্জাল সিরিয়া ও ইরাক-এর সাথে সংযোগ রক্ষাকারী এক রাস্তায় আবির্ভূত হবে। সে তার ডানে ও বামে হত্যাকান্ড, ধ্বংস ও ফিতনা-ফ্যাসাদ ছড়াবে। হে আল্লাহ'র বান্দাগন! অটল ও স্থির হয়ে থাকো। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ'র রাসূল! সে কত সময় পৃথিবীতে বর্তমান থাকবে? তিনি বললেনঃ চল্লিশ দিন। এর একদিন হবে এক বছরের সমান, এক দিন হবে এক মাসের সমান, এবং এক দিন হবে এক সপ্তাহের সমান এবং অবশিষ্ট দিনগুলো তোমাদের এই দিনের মতই দীর্ঘ হবে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ'র রাসূল! এক বছরের সমান দীর্ঘ দিনটিতে কী এক দিনের নামাযই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? তিনি বললেনঃ না, বরং অনুমান করে নামাযের সময় ঠিক করে নিতে হবে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ'র রাসূল! পৃথিবীতে দাজ্জাল কত দ্রুত গতি সম্পন্ন হবে? তিনি বললেন, বাতাস তাড়িত মেঘের মত দ্রুত গতি সম্পন্ন হবে। সে এক সম্প্রদায়ের কাছে আসবে এবং তাদেরকে নিজের দিকে আহবান করবে। তারা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তার হুকুমের অনুগত হবে। সে আসমানকে নির্দেশ দিলে তা তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করবে এবং সে জমিনকে হুকুম দিলে তা উদ্ভিদ উৎপাদন করবে। তাদের গৃহপালিত জন্তুগুলো সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরবে পূর্বের তুলনায় সুউচ্চ কুজ, দুধের লম্বা বাট এবং স্ফীত দেহ নিয়ে। অতঃপর সে আর এক সম্প্রদায়ের কাছে আসবে এবং তাদেরকে নিজের দিকে আহবান করবে। তারা তার আহবান প্রত্যাখান করবে। দাজ্জাল তাদের কাছ থেকে চলে যাবে। তারা অচিরেই অজন্মা ও দুর্ভিক্ষের মধ্যে পতিত হবে এবং তাদের হাতে ধন-সম্পদ কিছুই থাকবে না। দাজ্জাল এক বিধ্বস্ত এলাকা দিয়ে অতিক্রম করার সময় (ঐ এলাকাকে লক্ষ্য করে) বলবে, তোমার খনিজ সম্পদ রাশি বের করে দাও। সাথে সাথে এলাকার ধন-সম্পদ মধু-মক্ষিকার মত তার অনুসরণ করবে। অতঃপর সে পূর্ণ বয়স্ক এক যুবককে আহবান করবে (এবং সে তাকে অস্বীকার করবে)। দাজ্জাল তাকে তরবারী দিয়ে দ্বিখণ্ডিত করবে। অতঃপর টুকরো দু'টাকে পৃথকভাবে একটি তীরের পাল্লা পরিমাণ দুরত্বে রাখবে। অতঃপর সে তাকে ডাকবে এবং টুকরো দুইটা চলে আসবে। তার চেহারা তখন প্রফুল্ল হাস্যময় হবে। ইত্যবসরে, আল্লাহতা'আলা মসীহ ইবনে মারইয়াম (আঃ)-কে পাঠাবেন। তিনি দামেশকের পূর্ব অংশে সাদা মিনারের উপরে হালকা জাফরানী রঙের কাপড় পরিহিত অবস্থায় দুই ফেরেশতার পাখায ভর দিয়ে নেমে আসবেন। যখন তিনি মাথানত করবেন তখন মনে হবে যেন তার মাথা থেকে মুক্তার মত পানির বিন্দু টপকাচছে। যখন তিনি মাথা উঠাবেন তখনও তার মাথা থেকে মোতির দানার মত ঝরছে বলে মনে হবে। যে কাফীরের গায়ে তার নি:শাস লাগবে সে মারা যাবে| তার দৃষ্টি যতদূর যাবে তার নিঃশ্বাসও ততদুরে পৌছবে। তিনি দাজজালকে পিছু ধাওয়া করবেন এবং 'লুদ্দ' নামক স্থানে তাকে হত্যা করবেন। অতঃপর ঈসা (আঃ) ঐ সব লোকের কাছে আসবেন যাদেরকে আল্লাহ দাজ্জালের অনাসৃষ্টি থেকে নিরাপদ রেখেছেন। তিনি এদের চেহারা থেকে মলিনতা দূর করবেন এবং জান্নাতে তাদের যে মর্যাদা হবে তা বর্ণনা করবেন।

['লুদ্দ'(Lydda) নামক স্থানটি ফিলিস্তিনে অন্যযভাবে প্রতিষ্ঠিত ইহুদি রাষ্ট্র ইস্রাইলের রাজধানী তেলাবিব থেকে ছয় মাইল দূরে অবস্থিত। ইহুদীরা এখানে একটি বিরাট আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণ করেছে]। ইত্যবসরে আল্লাহ ঈসা (আঃ)-এর কাছে এই মর্মে নির্দেশ পাঠাবেন যেঃ আমি এমন একদল মানুষ আবির্ভূত করেছি যাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরার ক্ষমতা কারও থাকবে না। তুমি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে তূর পাহাড়ে চলে যাও। এরপর আল্লাহ ইয়াজুজ-মাজুজ সম্প্রদায়কে পাঠাবেন। তারা প্রত্যেক উচ্চভূমি থেকে বেরিয়ে আসবে। তাদের অগ্রবর্তী দল গুলো তারাবিয়া হ্রদ অতিক্রমকালে হ্রদের সব পানি পান করে ফেলবে। তাদের পরবর্তী দলও এই এলাকা অতিক্রম করবে। তারা বলবে, এখানে কোনও সময় পানি ছিল? আল্লাহ'র নবী ঈসা (আঃ) ও তার সাথীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। এ সময় তাদের কাছে গরুর একটি মাথা এত মূল্যবান হবে যেমন বর্তমানে তোমরা একশত দিনারকে মূল্যবান মনে কর। তখন ঈসা (আঃ) ও তার সাথীগন কাতরভাবে আল্লাহ'র কাছে প্রার্থনা করবেন। আল্লাহ'তা'আলা তাদের (ইয়াজুজ-মাজুজ) প্রত্যেকের ঘাড়ে এক ধরনের কিট সৃষ্টি করবেন। ফলে তারা একসাথে ধ্বংস হয়ে যাবে। এরপর আল্লাহ'র নবী ঈসা (আঃ) ও তার সঙ্গীরা পাহাড় থেকে জনপদে নেমে আসবেন। কিন্তু তারা এক ইঞ্চি যায়গাও ইয়াজুজ-মাজুযের লাশ ও দুর্গন্ধ ছাড়া খালি পাবেন না। অতঃপর আল্লাহ'র নবী ঈসা (আঃ) ও তার সংগীগন আল্লাহ'র কাছে কাতরভাবে প্রার্থনা করলে পর আল্লাহ'তা'আলা বুখতী উটের কুজ সদৃশ পাখি পাঠাবেন। এসব পাখি লাশগুলোকে নিয়ে আল্লাহ যেখানে ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দিবেন সেখানে ফেলে দিবে। অতঃপর মহান ও সর্ব শক্তিমান আল্লাহ এমন বৃষ্টি পাঠাবেন যা প্রতিটি স্থান, তা মাটির হউক অথবা বালুর, ধুয়ে আয়নার মত পরিস্কার করে দিবে। অতঃপর ভূমিকে বলা হবে: তোমার ফল উৎপাদন কর এবং বরকত ফিরিয়ে দাও (এতে বরকত, কল্যাণ ও প্রাচুর্য্য দেখা দেবে)। একটি ডালিম খেয়ে পূর্ণ একটি দল পরিতৃপ্ত হবে এবং ডালিমের খোসাটি এত বড় হবে যে, তার ছায়ায তারা আশ্রয় নিতে পারবে। গবাদিপশুতেও এত বরকত হবে যে, এটি মাত্র উষ্ট্রীর দুধ একটি বড় দলের জন্য যথেষ্ট হবে, একটি গাভীর দুধ একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে এবং একটি দুধেল বকরী একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে। অতঃপর আল্লাহ'তা'আলা পবিত্র হাওয়া প্রবাহিত করবেন। এই বাতাস তাদের বগলের নীচ পর্যন্ত লাগবে। ফলে সমস্ত মুমিন ও মুসলিমের মৃত্যু হবে। শুধু খারাপ লোকেরাই বেচে থাকবে। তারা গাধার মত প্রকাশ্যে যৌনাচার করবে। এদের উপরই ভয়ানক কিয়ামত সংগঠিত হবে।

***ইমাম মুসলিম হাদীসটি সংগ্রহ করেছেন।

___ দাজ্জাল বর্তমানে কোথায় আছে???___

(১৪) ফাতেমা বিনতে কায়স (রাদিঃ) হতে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেনঃ আমি মসজিদে গমণ করে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে নামায আদায় করলাম। আমি ছিলাম মহিলাদের কাতারে। তিনি নামায শেষে হাসতে হাসতে মিম্বারে উঠে বসলেন। প্রথমেই তিনি বললেনঃ প্রত্যেকেই যেন আপন আপন জায়গায় বসে থাকে। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা কি জান আমি কেন তোমাদেরকে একত্রিত করেছি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে এ সংবাদ দেয়ার জন্যে একত্রিত করেছি যে তামীম দারী ছিল একজন খৃষ্টান লোক। সে আমার কাছে আগমণ করে ইসলাম গ্রহণ করেছে। অতঃপর সে মিথ্যুক দাজ্জাল সম্পর্কে এমন ঘটনা বলেছে যা আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করতাম। লাখম ও জুযায়াম গোত্রের ত্রিশ জন লোকের সাথে সে সাগর পথে ভ্রমণে গিয়েছিল। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার শিকার হয়ে এক মাস পর্যন্ত তারা সাগরেই ছিল। অবশেষে তারা সাগরের মাঝখানে একটি দ্বীপে অবতরণ করলো। দ্বীপের ভিতরে প্রবেশ করে তারা মোটা মোটা এবং প্রচুর চুল বিশিষ্ট একটি অদ্ভুত প্রাণীর সন্ধান পেল। চুল দ্বারা সমস্ত শরীর আবৃত থাকার কারণে প্রাণীটির অগ্র-পশ্চাৎ কিছুই নির্ধারণ করতে সক্ষম হলোনা। তারা বললঃ অকল্যাণ হোক তোমার! কে তুমি? সে বললোঃ আমি সংবাদ সংগ্রহকারী গোয়েন্দা। তারা বললোঃ কিসের সংবাদ সংগ্রহকারী? অতঃপর প্রাণীটি দ্বীপের মধ্যে একটি ঘরের দিকে ইঙ্গিত করে বললোঃ হে লোক সকল! তোমরা এই ঘরের ভিতরে অবস্থানরত লোকটির কাছে যাও। সে তোমাদের কাছ থেকে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তামীম দারী বলেনঃ প্রাণীটি যখন একজন লোকের কথা বললোঃ তখন আমাদের ভয় হলো যে হতে পারে সে একটি শয়তান। তথাপিও আমরা ভীত হয়ে দ্রুত অগ্রসর হয়ে ঘরটির ভিতরে প্রবেশ করলাম। সেখানে প্রবেশ করে আমরা বৃহদাকার একটি মানুষ দেখতে পেলাম। এত বড় আকৃতির মানুষ আমরা ইতিপূর্বে আর কখনও দেখিনি। তার হাত দু’টিকে ঘাড়ের সাথে একত্রিত করে হাঁটু এবং গোড়ালীর মধ্যবর্তী স্থানে লোহার শিকল দ্বারা বেঁধে রাখা হয়েছে। আমরা বললামঃ মরণ হোক তোমার! কে তুমি? সে বললোঃ তোমরা আমার কাছে আসতে সক্ষম হয়েছ। তাই আগে তোমাদের পরিচয় দাও। আমরা বললামঃ আমরা একদল আরব মানুষ, নৌকায় আরোহন করলাম। সাগরের প্রচন্ড ঢেউ আমাদেরকে নিয়ে একমাস পর্যন্ত খেলা করলো। অবশেষে তোমার দ্বীপে উঠতে বাধ্য হলাম। দ্বীপে প্রবেশ করেই প্রচুর পশম বিশিষ্ট এমন একটি জন্তুর সাক্ষাৎ পেলাম, প্রচুর পশমের কারণে যার অগ্র-পশ্চাৎ চেনা যাচ্ছিলনা। আমরা বললামঃ অকল্যাণ হোক তোমার! কে তুমি? সে বললোঃ আমি সংবাদ সংগ্রহকারী গোয়েন্দা। আমরা বললামঃ কিসের সংবাদ সংগ্রহকারী? অতঃপর প্রাণীটি দ্বীপের মধ্যে এই ঘরের দিকে ইঙ্গিত করে বললোঃ হে লোক সকল! তোমরা এই ঘরের ভিতরে অবস্থানরত লোকটির কাছে যাও। সে তোমাদের নিকট থেকে সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তাই আমরা তার ভয়ে তোমার কাছে দ্রুত আগমণ করলাম। হতে পার তুমি একজন শয়তান- এ ভয় থেকেও আমরা নিরাপদ নই। সে বললোঃ আমাকে তোমরা ‘বাইসান’ সম্পর্কে সংবাদ দাও। আমরা তাকে বললামঃ বাইসানের সম্পর্কে কি জিজ্ঞেস করছো? সে বললোঃ আমি তথাকার খেজুরের বাগান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছি। সেখানের গাছগুলো এখনও ফল দেয়? আমরা বললামঃ হ্যাঁ। সে বললোঃ সে দিন বেশী দূরে নয়, যেদিন গাছগুলোতে কোন ফল ধরবেনা। অতঃপর সে বললোঃ আমাকে বুহাইরাতুত্ তাবারীয়া সম্পর্কে সংবাদ দাও। আমরা তাকে বললামঃ বুহাইরাতুত্ তাবারীয়ার সম্পর্কে কি জিজ্ঞেস করছো? সে বললোঃ আমি জানতে চাই সেখানে কি এখনও পানি আছে? আমরা বললামঃ তথায় প্রচুর পানি আছে। সে বললোঃ অচিরেই তথাকার পানি শেষ হয়ে যাবে। সে পুনরায় বললোঃ আমাকে যুগার নামক ঝর্ণা সম্পর্কে সংবাদ দাও। আমরা তাকে বললামঃ সেখানকার সম্পর্কে কি তুমি জানতে চাও? সে বললোঃ আমি জানতে চাই সেখানে কি এখনও পানি আছে? লোকেরা কি এখনও সে পানি দিয়ে চাষাবাদ করছে? আমরা বললামঃ তথায় প্রচুর পানি রয়েছে। লোকেরা সে পানি দিয়ে চাষাবাদ করছে। সে আবার বললোঃ আমাকে উম্মীদের নবী সম্পর্কে জানাও। আমরা বললামঃ সে মক্কায় আগমণ করে বর্তমানে মদীনায় হিজরত করছে। সে বললোঃ আরবরা কি তার সাথে যুদ্ধ করেছে? বললামঃ হ্যাঁ। সে বললোঃ ফলাফল কি হয়েছে? আমরা তাকে সংবাদ দিলাম যে, পার্শ্ববর্তী আরবদের উপর তিনি জয়লাভ করেছেন। ফলে তারা তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছে। সে বললঃ তাই না কি? আমরা বললাম তাই। সে বললোঃ তার আনুগত্য করাই তাদের জন্য ভাল। এখন আমার কথা শুন। আমি হলাম "দাজ্জাল"। অচিরেই আমাকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। আমি বের হয়ে চল্লিশ দিনের ভিতরে পৃথিবীর সমস্ত দেশ ভ্রমণ করবো। তবে মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করা আমার জন্য নিষিদ্ধ থাকবে। যখনই আমি মক্কা বা মদীনায় প্রবেশ করতে চাইবো তখনই ফেরেশতাগণ কোষমুক্ত তলোয়ার হাতে নিয়ে আমাকে তাড়া করবে। মক্কা-মদীনার প্রতিটি প্রবেশ পথে ফেরেশতাগণ পাহারা দিবে। হাদীসের বর্ণনাকারী ফাতেমা বিনতে কায়েস বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের লাঠি দিয়ে মিম্বারে আঘাত করতে করতে বললেনঃ এটাই মদীনা, এটাই মদীনা, এটাই মদীনা। অর্থাৎ এখানে দাজ্জাল আসতে পারবেনা। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তামীম দারীর হাদীসটি আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে। তার বর্ণনা আমার বর্ণনার অনুরূপ হয়েছে। বিশেষ করে মক্কা ও মদীনা সম্পর্কে। শুনে রাখো! সে আছে সাম দেশের সাগরে (ভূমধ্য সাগরে) অথবা আরব সাগরে। তা নয় সে আছে পূর্ব দিকে। সে আছে পূর্ব দিকে। সে আছে পূর্ব দিকে। এই বলে তিনি পূর্ব দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন। ফাতেমা বিনতে কায়েস বলেনঃ “আমি এই হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট থেকে মুখস্থ করে রেখেছি।"

উপরের সহীহ হাদীস সমূহের আলোচনা থেকে আমরা "মশীহে দাজ্জাল" সম্পর্কে অবগত হলাম।

দাজ্জাল সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম যে ভবিষ্যত বাণী করেছিলেন সেটা ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে গায়েবী খবর তাই নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামও নির্দিষ্ট করে বলেন নাই। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম যা বলেন তা ওহীর মাধ্যমে যেমনঃ

আল্লাহ বলেছেনঃ { }النجم وَمَا يَنطِقُ عَنِ الْهَوَى{৩} إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى{৪} তিনি নিজের প্রবৃত্তি থেকে কিছু বলেন না। একমাত্র উহা হল ওহী যা তাঁর নিকটে প্রত্যাদেশ বা হুকুম করা হয়।

***সূরা আন-নাজমঃ আয়াতঃ ৫৩:৩-৪।

আমরা আশা করি, বাজারে প্রচলিত ভিত্তিহীন ও মনগড়া লিখিত বই পুস্তকে যেভাবে "মশীহে দাজ্জাল-কে" অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করা হয় বা হয়েছে তা থেকে নিষ্কৃতি পাব ইন-শা-'আল্লাহ। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে কুরআন ও সহীহ হাদীস-এর আলোকে সত্য ও সঠিক জানার তৌফিক দিন এবং যে পথে চললে তিনি রাজি-খুশি হবেন সেই পথে আমাদেরকে পরিচালিত করুন। আমীন।

শেষ কথা, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের ধারণাটা সঠিক ছিলনা বলে মন্তব্য করার মত ধৃষ্টতাকারী মুমীন হওয়ার দাবি করতে পারেনা। এমন মন্তব্য করা সুন্নীপন্থী মুসলিমতো দুরের কথা কোন গোমরাহ মুসলিম থেকেও এমন কথার প্রমাণ পাওয়া যায়না।

মন্তব্যঃ

যে রাসুল (সাঃ)-এর ভুল ধরে, সে তো আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ)- তথা ইসলামের প্রকাশ্য শত্রু।

বিষয়: বিবিধ

২৪৫১ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

271713
০৫ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৫৩
ফেরারী মন লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ... অনেক অনেক শুকরিয়া আপনার জন্য অনেক সুন্দর একটি টপিক্স আলোচনা করার জন্য। অনেক কিছু শিখলাম এবং জানলাম।

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে কুরআন ও সহীহ হাদীস-এর আলোকে সত্য ও সঠিক জানার তৌফিক দিন এবং যে পথে চললে তিনি রাজি-খুশি হবেন সেই পথে আমাদেরকে পরিচালিত করুন। আমীন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File