হিমুরাইজ = শেষ পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন মোস্তফা সোহলে ২৬ অক্টোবর, ২০১৬, ১০:০২:১৯ সকাল



হিমুরাইজ = শেষ পর্ব

বিকাল থেকে আজাদ স্যারের শরীরটা বেশি ভাল না।ভাল করে কথাও বলতে পারছেন না।ডাক্তার এসে দেখে গেছেন।অবস্থা বেশি খারাপ হলে হাসপাতালে নিতে হবে।আগামীকাল সকালে জেরিন এখানে এসে পৌছাবে।সজীব ভাই এয়ারপোর্টে গেছেন জেরিনকে নিয়ে আসতে।আমি সব সময় বসে আছি স্যারের কাছে।আজাদ স্যার ঘুরেফিরে একটা কথাই বলছেন জেরিন কখন আসবে।তিনি শেষ পর্যন্ত জেরিনকে দেখতে পারবেন তো?

আমি স্যারকে বলি,জেরিনকে আপনি অবশ্যই দেখতে পারবেন।

আপনি বেশি উত্তেজিত হবেন না।ডাক্তার আপনাকে উত্তেজিত ও কথা বেশি বলতে নিষেধ করেছেন।তবুও স্যার নিজের মনে বিড় বিড় করে কত কথা বলে যান।সন্ধ্যার দিকে স্যারের বুকের ব্যাথাটা আরও বাড়ল।আমি হাসপাতালে ফোন করলাম এ্যাম্বুলেন্সের জন্য।

স্যারকে এখন জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়েছে।ডাক্তার এসে বললেন হার্ট অ্যাটাক।স্যারকে এখন অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে।আমি বার বার আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি বাবা ও মেয়ের মিলনটা যেন হয়।ডাক্তার জিজ্ঞেস করলেন আমি রোগীর কি হই।

আমি বললাম প্রাইভেট এ্যাসিসটেন্ট।

ডাক্তার স্যারের নিকট আত্বীয়দের খবর দিতে বললেন।

আমি বললাম, উনার একমাত্র মেয়ে আসছেন আমেরিকা থেকে।সকালের মধ্যে উনি এসে প‌ৌছাবেন।সারারাত জেগে আছি এর মধ্যে স্যারের একবারও জ্ঞান ফেরেনি।একটু আগে ফজরের আযান দিয়েছে।ডাক্তার এসে আমাকে বললেন , স্যরি মিঃ নীল আপনার স্যারকে আমরা বাঁচাতে পারলাম না।

আজাদ স্যার আর বেঁচে নেই!!

তিনার শেষ ইচ্ছা একমাত্র মেয়ে জেরিনকে তিনি দেখে যেতে পারলেন না।

জেরিন এসে দেখবে তার বাবা আর পৃথিবীতে নেই।

এটাই যেন নিয়তির নির্মম পরিহাস।

সৃষ্টি কর্তার কি এমন ক্ষতি হত বাবা আর মেয়ের মধ্য একটু মিলন ঘটালে। আমি লাশের পাশে গেলাম।সাদা কাপড়ে আবৃত আজাদ স্যারের মৃত দেহ।স্যারের মৃত মূখটা দেখলাম।মনে হচ্ছে বড় নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন তিনি।আসলেই কি তিনি নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন?

একমাত্র মেয়েকে একটিবার না দেখার যন্ত্রনা কি তিনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে না।

জেরিন এসে গেছে।এখন জেরিনকে কি ভাবে বলব তার বাবা আর বেঁচে নেই।তবুও এই চরম সত্যটা তো তাকে বলতেই হবে।জেরিনকে নিয়ে সোজা লাশের কাছে চলে গেলাম।ঘটনার আকষ্মিকতায় জেরিন হতভম্ব হয়ে পড়েছে।

মানুষের চোঁখের দিকে গভীর দৃষ্টি দিয়ে তাকালে নাকি সেই চোঁখে আকাশ দেখতে পাওয়া যায়।

আমি জেরিনের চোঁখের দিকে গভীর দৃষ্টি দিয়ে তাকালাম।

জেরিনের চোঁখের আকাশে এখন শ্রাবনের মেঘের ঘনঘটা।

সেই আকাশ থেকে যে কোন মূহুর্তে বৃষ্টি নামবে।

ঝুম বৃষ্টি।

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

379119
২৭ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০১:১৮
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ / পিলাচ
379232
২৯ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৯:৩২
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : ভাই আপনার লেখার হাত দারুণ। এককথায় হুমায়ূন। তবে হুমায়ূন এর দর্শন থেকে একটু বের হয়ে আসতে হবে। যেমন আপনি লিখেছেন "সৃষ্টি কর্তার কি এমন ক্ষতি হত বাবা আর মেয়ের মধ্য একটু মিলন ঘটালে" এ লাইনটা শিরকের পর্যায়ে চলে গেছে। তওবা করা জরুরি।
আপনার লেখার মুগ্ধপাঠক হিসেবে দাবী আপনি আরো লিখুন এই সিরিজটা। এখানেই শেষ করবেন না প্লিজ। অনেক ধন্যবাদ।
৩০ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৯:৫৪
314073
মোস্তফা সোহলে লিখেছেন : ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আল্লাহর কাছে সবসময় দোয়া করি যেন ভুল করেও কোন দিন শিরকের মত মহা পাপ না করি। আশা করি এভাবে পাশে থাকবেন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File