আবদুল গাফফার চৌধুরীর নতুন বিবৃতি ও তার জবাব
লিখেছেন লিখেছেন অগ্রহায়ণ ০৬ জুলাই, ২০১৫, ১০:৪৩:২১ রাত
আবদুল গাফফার চৌধুরীর নতুন ভিডিও বিবৃতি দেখে মনে হলো না যে, তিনি ইসলামের অবমাননা করতে চেয়েছেন।
আসলেই তিনি কি বলেছেন বা কি বলতে ছেয়েছেন? উনার কথার জবাব দেয়া যাক -
১.
তিনি বলেছেন আল্লাহর গুনবাচক ৯৯ নামগুলি আসলে রাসুল সঃ এর আগে দেবতার নামে চালু ছিল।
তার প্রমান দিয়ে তিনি বলেছেন, রাসুল সঃ এর আব্বার নাম আবদুল্লাহ ছিল। আর এই নাম ইসলাম আসার আগে রাখা হয়েছে।
জবাব - ইসলাম পুর্ব মক্কার মানুষরা অসংখ্য দেবতার পুজা করলেও তারা এক মহান ইশ্বরে বিশ্বাসী ছিল।
তারা মনে করত এসব দেবতার ও একজন ইশ্বর আছেন। আর দেবতারা সেই ইশ্বরের অংশীদার। কিন্তু মহাইশ্বর আছেন।
প্রমান দিচ্ছি - রাসুল সঃ জন্মের ৪৫ বছর আগে বাদশা আবরাহা কাবা আক্রমন করেছিল। এই সময় কাবার খাদেম ছিল আবদুল মুত্তালিব।
লোকেরা আব্দুল মুত্তালিব কে কাবা রক্ষার ব্যাবস্থা নিতে বললে, তিনি জবাব দেন, যিনি কাবার বড় মালিক তিনিই কাবা রক্ষা করবেন।
( এখানে আবদুল মুত্তালিব সেই মহান ইশ্বরের দিকে ইংগিত করেছেন। আর সেই মহান ইশ্বর বাদশা আব্রাহার বিরুদ্ধে আবাবীল পাখির বাহিনী পাঠিয়ে ছিল)
আবদুল গাফফার চৌধুরী এমন একজন দেবতার নাম ও বলেননি যেটা আল্লাহর নামের সাথে মিলে।
সুতারাং তার এই যুক্তি টা ঠিকে না যে আল্লাহর নাম সমুহ দেবতার নাম ছিল।
আর "আবদুল্লাহ" নামের প্রচলনের কারন তো বলেই দিলাম।
২.
তিনি বলেছেন, হজ হলো কাফেরদের আমল। রাসুল সঃ এটা কে পরিমার্জিত করে শরিয়তে ইনক্লুড করেছেন।
জবাব - এটা ডাহা মিথ্যা কথা।
আমার জানা মতে হযরত ইব্রাহিম আঃ ও তার ছেলে ইসমাইল আঃ কাবা পুনঃনির্মানের পর আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য হজ ফরজ করেন। তবে আমরা এখন যেভাবে করি সেভাবে নয়। তাদের সময় হজের অনুসংগ কিছু কম ছিল। তবে সকল জামানায় কাবা ঘর তাওয়াফ ফরজ ছিল।
তাই এটা স্পষ্ট যে, কাফেরদের দ্বারা "হজ" প্রবর্তিত হয়নি। হজ আল্লাহ দেয়া একটা গুরুত্ব পুর্ন আমল।
আর কাফেররা এই আমল কে বিকৃত ভাবে পালন করত।
( যেমন - উলংগ হয়ে কাবা তাওয়াফ করা)
রাসুল সঃ এর জামানায় হজের আনুসংগ পরিপুর্নতা লাভ করে।
৩.
তিনি বলেছেন রাসুল মানে এম্ব্যাসেডর। যে কারো নাম রাসুল রাখা যায়।
জবাব - এইখানে তিনি একটু মিসটেক করে ফেলেছেন। "রাসুল" শব্দ টি ব্যবহার হয় ইসলামিক পরিভাষায়। আর এই শব্দ দ্বারা মানুষ আল্লাহর প্রেরিত বান্দার কথাই মনে করে নেয়।
এখন যদি কেউ এসে হঠাৎ করে "রাসুল" শব্দের পরিভাষা চেঞ্জ করতে বলে তাহলে তো মানুষ চেতবেই। কারন আপনি শব্দটি কে চ্যালেঞ্জ করতেছেন।
আর হ্যা, যে কারো নাম "রাসুল" রাখা যায়। তাতে কোন সমস্যা নাই।
৪.
তিনি বলেছেন - আবুল কাশেম অর্থ কাশেমের বাপ। কিন্তু আমরা একটা বাচ্চা ছেলের নাম জন্মের পর "আবুল কাশেম" রাখি। এটা ভুল।
জবাব - হ্যা। এটা তিনি ঠিক বলেছেন। আমরা না জেনে এসব নাম রাখি। তবে "আবুল কাশেম" বলা হত আমাদের রাসুল সঃ কে। কেননা তার সন্তানের নাম ছিল কাশেম।
৫.
তিনি বলেছেন - আবু হুরাইয়ারা অর্থ বিড়ালের বাপ । রাসুল সঃ ঠাট্টা করে তাকে আবু হুরাইয়ারা ডাকতেন।
জবাব - আবু হুরাইয়ারা কে রাসুল সঃ ঠাট্টা করে নয় আদর করে ডাকতেন। কারন আবু হুরাইয়ারার চাদরের নিচে সব সময় একটা বিড়াল থাকত। আর তাই রাসুল সঃ আদর করে ডাকতেন - বিড়ালের বাপ।
৬.
তিনি সর্ব শেষ যেটা বললেন, জামাতিরা তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে বিদ্ধেষ ছড়াচ্ছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে তাকে হেয় করছে। আর তিনি তাদের ছেয়ে বড় মুসলমান।
জবাব - আগে বলে রাখি আমি জামাত করিনা বা জামাতের সাপোটার ও নই।
আপনার বক্তব্য গুলা বিকৃতভাবে ছড়িয়েছে আমাদের দেশের কিছু সস্তা অনলাইন নিউজ পোর্টাল।
একেক কথা কে একেক ভাবে কেটে ছেটে তারা প্রচার করেছে তাদের ব্যবসার খাতিরে।
এখানে জামাত কে টেনে আনা হীনমন্যতার পরিচয়।
আর একটা কথা বলি-
আপনি তো সারা জীবন আওয়ামীদের সাফাই গেয়েছেন। ভারতের দালালি করে পেপারে কলাম লিখেছেন সেই লন্ডনে বসে।
হঠাৎ এমন ইসলামী ভাষাবিদ হতে গেলেন কোন আহম্মকের পাল্লায় পড়ে?
যেসব জানেন না তা নিয়ে ফাল পাড়বেন না।
আওয়ামির দালালী করতেছিলেন, সেটাই করুন। সেটাই আপনি ভাল পারেন।
বিষয়: বিবিধ
১২৮২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন