___নিশিকন্যা___

লিখেছেন লিখেছেন অগ্রহায়ণ ২২ নভেম্বর, ২০১৪, ০৮:৪০:৫৩ রাত

................................................................................... তারপর, ভদ্র লোক প্যান্ট পড়তে পড়তে একদলা থু থু ফেলল তার পায়ের কাছে।

রুম থেকে বেরুবার সময় ৫'শ টাকার নোট বিছানায় ছুড়ে দিল ঘৃনা ভরে। তারপর একবার ও পিছন না ফিরে হন হনিয়ে বেরিয়ে গেলেন।

কিছুক্ষন পর বিছানা থেকে গা তুলে টাকাটা তুলে নিল ।

শাড়ি পড়তে পড়তে নিজের শরীরের দিকে অসহায় ভাবে তাকালো বিউটি।

ঘুমন্ত শহরে শুধু ল্যাম্প পোস্ট গুলো জেগে আছে। দমকা একটা ঠান্ডা বাতাস লাগল তার গায়ে।

রাস্তার আইল্যান্ড ধরে হাটছে সে। পেটে অসহ্য রকম ব্যাথা করছে।

হাটতে হাটতে চার চাকা ওয়ালা একটা ভাসমান চায়ের দোকানের পাশে দাড়াল সে।

- এক কাপ চা দেন ভাই।

দোকানদার কিছুক্ষন সন্দেহের চোখে তার দিকে চেয়ে রইল। তারপর বলল, যাহ ভাগ এখান থেকে। তুরে চা খাওয়াইলে আমার দোকানে আল্লার গজব পড়বো।

সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভ্যানিটিব্যাগ থেকে ২০ টাকা বের করে দিল।

দোকানদার চা বানাতে বানাতে বলল, কাস্টমার হইল সাক্ষাত লক্ষী। ফিরায়ে দিলে ব্যাবসা লাঠে উঠবো। নইলে লাখ টেকা দিলেও তোকে চা দিতাম না।

সে দোকানদারের কথায় কান দিল না। পাশের একটা বেঞ্চিতে পা দুলিয়ে বসে আয়েশ করে চা খেল।

রাত ২ টা।

বস্তির নিজের খুপরি তে ফিরল সে।

ডালা খুলে ঘরে ঢুকতেই সিগারেটের ভোঁটকা গন্ধ নাকে লাগল তার।

খাটের উপর পা ছড়িয়ে বসে আছে তার স্বামী।

ঘরে ঢুকতেই সে সিগারেটে টান দিয়ে বলল, কিরে মাগি আজ এত লেট করলি কেন?

একবার স্বামীর দিকে তাকিয়ে ঘরের কোনে কাপড়ের আলনার দিকে চলে গেল বিউটি।

- কিরে কথা কস না কেন। আইজ কত টেকা কামাইলি?

- আইজ টেকা পাই নাই। কঠিন স্বরে বলল সে।

- কিইইই। আমার লগে মিছা কথা কস। বলতে বলতে বিছানা থেকে উঠে পিছন থেকে তার চুল মুট করে ধরল।

- বলছি না টেকা নাই। আমি শরীর বেচে টেকা কামাই আর সে টেকাই তুই মদ গিলবি। আজ থেইক্কা আর একটা টেকাও পাবি না তুই। চুল ছাড়ানোর ব্যার্থ চেষ্টা করতে করতে বলল সে।

- কি এত্ত বড় কথা। মাগীর শইলে চর্বি জমছে। খাড়া তোর চর্বি কমাইতেছি।। বলতে বলতে খাটে ফেলে দিয়ে লাথি ঘুসি মারতে থেকে ।

তারপর ভ্যানিটিব্যাগ কেড়ে নিয়ে সব টাকা নিয়ে বেড়িয়ে গেল বিউটির স্বামী।

কিছুক্ষন পর চোখ মুছতে মুছতে খাট থেকে উঠে ঘরে অন্য কোনে রাখা ট্রাংকের দিকে গেল বিউটি।

ট্রাংক খুলে কাপড় চোপাড় বাইরে ছুড়ে ফেলে নিচ থেকে একটা শিশি বের করল সে।

তারপর অনেক্ষন তাকিয়ে থাকে বিষের শিশির দিকে।

একসময় সেটাও ছুড়ে ফেলে হু হু করে কেদে উঠে সে।

এবারও নিজেকে শেষ করতে পারে না সে।

পৃথিবীর এই ঘৃনাময় জীবন নিয়ে বেচে থাকতেও বড্ড মায়া লাগে তার।

বিষয়: বিবিধ

১১৬৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

286962
২২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১০:২৭
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : গল্প বাস্তবতা ফুটে উঠেছে ধন্যবাদ।
286983
২২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৪৯
নারী লিখেছেন : একটু খারাপ লাগল(এটা ভালো লাগল অর্থে বুঝালাম)
286984
২২ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৪৯
নারী লিখেছেন : একটু খারাপ লাগল(এটা ভালো লাগল অর্থে বুঝালাম)

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File