অতিথি তুম কাব যাওগে......?
লিখেছেন লিখেছেন অগ্রহায়ণ ২১ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:০৬:৪৯ দুপুর
নার্সারি ক্লাস থেকে ৫ শ্রেণী পর্যন্ত আমাদের লাঞ্চ ব্রেক ছিল না। মর্নিং শিফটে সব ক্লাস খতম।
যখন ৬ষ্ট শ্রেণী তে উঠলাম তখন আমার লাঞ্চের ব্যাবস্থা হলো "নানার বাড়ী" তে। কারন ইস্কুলের পাশেই ছিল নানার বাড়ী।
তো, প্রথম কয়েকদিন ভালোই সমাদর পেলাম। আমি গেলেই টেবিলে ভাত বেড়ে দিত। খাবার সময় কেউ না কেউ আমার পাশে দাড়িয়ে থাকত
তরকারী ও পেতাম মজাদার।
কিন্তু আমার কপাল মন্দ হতে বেশী সময় লাগল না।
সপ্তাহ খানেক পরেই দেখা গেল,আমাকে কেউ তেমন পাত্তা দিচ্ছে না।
আমি এসে বসে থাকলেও কারো টিকিটিরও দেখা পেতাম না।
অনেক্ষন পর খালা / নানী দুর থেকে ব্যস্ত ভংগীতে বলত, রান্না ঘরের শেলফে ভাত আর তরকারী আছে, খেয়ে নে।
যাক নিজে খেয়ে নিলেও তরকারী ভাল পদের পাওয়া যেত। কিন্তু ক'দিন বাদে পোড়া দিম ভাজি অথবা মশুর ডাল ছাড়া কিছুই পাওয়া যেত না।
মনে বেজায় দুঃখ নিয়ে নানা বাড়ীর খাবার থেকে নির্বাসিত হলাম।
এর পর থেকে "নানা বাড়ী মধুর হাড়ী" -- কথা টা যে বলেছে তার চৌদ্দ গুষ্টি উদ্দার করতাম।
/////
ইদানিং পুরানো চক্রে আবার ফেসে যাচ্চি।
তবে এবার আমি ই মেজবান। মেহমান অন্য কেউ।
বিষুদ বার হলেই আমার এক পুরানো কলিগ এসে হাজির।
বিষুদ বার রাতে খাবেন, ঘুমাবেন। শুক্রবার সকাল ১১ টায় জাগবেন। তারপর আমার লুঙ্গী, টাওয়াল, সাবান নিয়ে দীর্ঘক্ষন হট শাওয়ার নিবেন।
খেয়ে দেয়ে আমার সাথে গল্প গুজব করে ((পড়ুন বিরক্ত করে)) সন্ধ্যার সময় বিদেয় হবেন।
এত টুকু হলেও চলত। সপ্তাহে মাত্র একটা দিন। ম্যানেজ করে নেওয়া যাই।
কিন্তু কয়েকদিন আগে সেই মহামান্য অতিথি কাধে একটা ব্যাগ ঝুলিয়ে হাজির।
আমাকে দেখে একটা সেরাম মিস্টি হাসি দিয়ে বলল, অগ্রহায়ণ সাহেব ক'দিনের জন্য আপনার আস্তানায় থাকবো বলে আসলাম। কিছু মনে করেননি তো?
আমিও হেসে ((পড়ুন কেঁদে) বললাম, আরে ভাই কি যে বলেন। মনে করার কি আছে। এটার আপনার ঘর মনে করে থাকেন।
উনি আমার কথা যথাযথ ভাবে পালন করছেন। নিজের ঘর মনে করেই আছেন।
আর আমি নিজের ঘরেই পরবাসী।
মনে মনে দোয়া করছি, আল্লাহ আমি তোমার অসহায় বান্দা। তুমি আমার মহামান্য অতিথি রে উঠাইয়া লও। আম্রে বাচাওওওওও।
বিষয়: বিবিধ
১০৭৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন