”বেহায়াপনা, দুর্র্নীতি ও সন্ত্রাস” অতীত ও বর্তমান আবদুল কাদের
লিখেছেন লিখেছেন নিঝুম অরন্ন ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১২:২৩:২৩ দুপুর
”বেহায়াপনা, দুর্র্নীতি ও সন্ত্রাস” অতীত ও বর্তমান
আবদুল কাদের
অতীত
ঐতিহাসিক Well hausen এর মতে, " The religion of the Arabs as well as their political life was on a thoroughly primitive livel"
ঐতিহাসিকদের চিহ্নিত The age of ignorance এর সময়ের মানুষেরা বেহাপনায় এতো চরমে উঠেছিল যে, নারী-পুরুষ উলঙ্গ হয়ে কাবার চারদিকে তাওয়াফ করত।
Emotion as the basis of civilization গ্রন্থে ঐতিহাসিক জে.এইচ. ডেনিসন বলেন : " : " In the fifth and sixth centuries, the civilization world stood on the verge of chaos. It seemed then that the great civilization which it had taken four thousand years to construct was on the verge of disintegration, and that mankind was likely to return to condition of barbarism where every tribe and sect was against the nest, and law and order was unknown...............The new sanctions created by Christianity were working division and destruction instead of unity and order. It was among these people (Arabs) that the man was born who was to unite the whole known world of East and South.
" Never in the history of the world was the need so great, the time so ripe for the appearance of a delivere" Syed Ameer Ali তার A short History of the Saracens তে এ কথা বলেন।
"War, women and wine were three absorving passions of the Arabs, Arabia as Mohammad found it was steeped in ignorance barbarism and fetishism of the worst type. S. Khuda Bakhash Zvi The Arab civilization "গ্রন্থে এ কথা বলেন ।
Philip.K. Hitti ঐতিহাসিক তার History of the Arabs- এ বলেন "The term jahiliyah, usually rendered time ignorance or barbarism in reality means the period in which Arabia had no dispensation no inspired prophet no revealed."
সন্ত্রাস- দুর্নীতি বাড়ছে। সমাজ জিম্মী হয়ে পড়েছে দুর্নীতিবাজদের হাতে। স্বাধীন দেশের নাগরিকরাও চলাফেরা করতে পারছে না স্বাধীনভাবে। সমাজের রন্ধ্রে প্রবেশ করে ক্যান্সার আকার ধারণ করছে এ সমস্যা। এ সমস্যা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সামাজিক অবস্থাও কম দায়ী নয়।
বিশ্বে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়স্ক শতকরা ৩১ভাগ মেয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবৈধ যৌনকর্মে লিপ্ত হয়। ২০ বছরের নিচের যুবতীদের অবৈধ কর্মের হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। ২০ থেকে ২৪ বছর বয়স্ক মহিলাদের শতকরা ৮৬ ভাগ অবৈধ মিলনের শিকার হয়। বিশ্বে ২.২৫ বিলিয়ন নর-নারী দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত। বিভিন্ন দেশে শতকরা ৯৫ জনই ব্যভিচারে লিপ্ত। Homosexuality বৈধ ঘোষনা করে বিপুল ভোটাধিক্যে আইন পাশ হচ্ছে পশ্চিমা দেশে আর আমাদেও প্রতিবেশী দেশ ভারত ও এই পথে পা বাড়াচ্ছে। সমকামীরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে। অনেক উন্নত রাষ্ট্রে নৃত্যশালা, নৈশক্লাব, Beauti Saloons, Massege room, Manleare shops, Hair Dressing Saloons প্রায় পতিতালয়ে পরিণত হয়েছে। পাশ্চাত্য দেশ সমূহে পতিতালয় ছাড়া বহু Assignation house বা Call house এবং Back to nature club এর সদস্যরা ক্লাব সীমার ভেতরে সম্পূর্ণ উলঙ্গভাবে চলাফেরা করে। এ দেশে ১৯৭৮ সালে ৭৩৩ জন ধর্ষিত হয়, ১১০ জন এসিড নিক্ষেপের শিকার হয়, যৌতুকের কারণে ৬৬ জনের মৃত্যু হয়। ২০০০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ দেশে ধর্ষণ হয়েছে ৩৪১২৮টি। এ দেশে ৪৫ লক্ষ মানুষ নেশায় আক্রান্ত সুতরাং সর্বত্র Acute problem হচ্ছে নৈতিক অবক্ষয়, যা বৃদ্ধি করছে সন্ত্রাস ও দুর্নীতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে।
মানবাধিকার সনদকে পদতলে পিষ্ট করে আফগানিস্তান, ইরাক ও লিবিয়াসহ দেশে দেশে বোমাতংক এবং সামাজিক নৈরাজ্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও অস্থিতিশীল বিশ্ব পরিস্থিতি আজ জাতিসংঘের অস্তিত্বকে প্রশ্নের সম্মুখীন করছে, বিশ্বমানবাধিকার পরিস্থিতিকেও বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
বাংলাদেশে ২০০১ সালে মোট খুন ৩৬৯২টি, ২০০৩ সালে ৩৩৬১টি, ২০০৩ সালে জানুয়ারী-আগষ্ট পর্যন্ত ৮ মাসে খুন হয়েছে ৩৩৯০ জন। গত সংসদ নির্বাচনের পরবর্তী ২০ মাসে দৈনিক গড়ে ১৮টি খুন হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে মানবতা শৃংখলিত। চারদিকে সর্বনাশা আগুনের লেলিহান শিখা।
দুর্নীতির কারণে অল্প সংখ্যক লোকের হাতেই দেশের সম্পদ পুঞ্জিভূত হচ্ছে।
এ যাবৎ আমেরিকা যে সব রাষ্ট্র আক্রমন করেছে তন্মধ্যে কিছু নিম্নরূপ-
১) চীন ১৯৫০-১৯৫৩ সাল পর্যন্ত
২) কোরিয়া ১৯৫০-১৯৫৩ ”
৩) ইন্দোনেশিয়া ১৯৯৮ ”
৪) কিউবা ১৯৫৯-১৯৬০ ”
৫) গুয়েতেনামা ১৯৪৫-১৯৬৭ ”
৬) ভিয়েতনাম ১৯৬১-১৯৬৪ ”
৭) কঙ্গো ১৯৬১-১৯৬৪ ”
৮) লাওস ১৯৬৪-১৯৭৩ ”
৯) পিরু ১৯৬৪-১৯৬৫ ”
১০) কম্বোডিয়া ১৯৫৯-১৯৬০ ”
১১) নিকারাগুয়া ১৯৮০ ”
১২) সুদান ১৯৮৬ ”
১৩) লিবিয়া ১৯৮৫ ”
১৪) পানামা ১৯৮৯ ”
১৫) বসনিয়া-হার্জিগোভিনা ১৯৯৫ ”
১৬) সুগোস্ল¬াভিয়া ১৯৯৯ ”
১৭) ইরাক ১৯৯১ থেকে, আবার ২০০৩ হতে বর্তমানে চলছে
১৮) লিবিয়া বর্তমানে চলছে ।
যারা The project for a new american Century (Pnac) এর খবর রাখেন তারা দেখতে পাবেন আমেরিকার নৃশংস শকুনগুলো কিভাবে মানচিত্র পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাড়ছে সন্ত্রাস ও দুর্নীতি।
বাংলাদেশ ঃ
১) ১০ জানুয়ারী-২০০৩ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি রিপোর্ট ছাপা হয় বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে “বাংলাদেশ ইমপ্রুভিং গভর্নেস ফরদা রিভিউসিং প্রভার্টি” শীর্ষক প্রতিবেদনে প্রশাসনের কর্তব্যবোধের অভাব, অদক্ষতা, দুর্নীতি, সরকারী সেবার অত্যন্ত নি¤œমান, জনগণকে সেবা প্রদানের ব্যাপারে প্রশাসনের অমনোযোগ ইত্যাদির একটি হতাশা ব্যঞ্জক চিত্র ফুটে উঠেছে।
২) টি.আই.আর এক তথ্যানুসন্ধানী গবেষণা প্রতিবেদনে উলে¬খিত হয়েছে যে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পেশকৃত ৭৭০ টি অডিট রিপোর্টের মধ্যে ৬৯টি আলোচিত না হওয়ায় প্রায় হাজার কোটি টাকার অডিট আপত্তি ঝুলে আছে প্রথম আলো-২২-০৯-২০০২ইং।
৩) আমাদের শিক্ষিত লোকদের দুর্নীতি প্রসঙ্গে “ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ” উল্লেখ করেছে প্রতিবছর দুর্নীতির কারণে সরকারের অপচয় হয় ১১,২৫৬ কোটি টাকা। দৈনিক যুগান্তর-২০৩-০৯-২০০৩ইং।
রক্তপাত, হত্যা, ধর্ষণ ও সীমাহীন নিপীড়নের মুখে মানুষের জীবন ও অস্তিত্ব এখন হুমকীর সম্মুখীন। ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠন নিজেদের মধ্যে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তপাত , হত্যা-খুন হয় এবং বিরোধী দলের ছাত্রসংগঠনের নেতা কর্মীদের হত্যা করে এবং এমনকি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিবির কর্মীর পায়ের কবজি কেটে ফেলে । যা জাতি হতবাগ হয়ে তাকিয়ে ছিল। আমরা দেখেছি আওয়ামী সরকার যখন নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য বিরোধী নেতাকর্মীদের অন্যায় ভাবে আইন শৃংখলা বাহিনী দিয়ে নির্বীচারে গুলি চালিয়ে প্রায় ১৪৩০ জনকে হত্যা করে এবং অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়। জেল-জুলুম দিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে দমানোর চেষ্টা করা হয়। সামপ্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশ মানবাধিকার সংক্রান্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে ” বরাবরের মত বাংলাদেশে নানা সমস্যা দুর্নীতি ও রাজনৈতিক সংকটের কথা বলা হয়েছে সাধারন নাগরিকদের ব্যক্তি অধিকারে হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক সহিংসতা এবং সরকারী দুর্নীতি কোনো ক্রমে কমছেনা ।” ২০০১-০৫ পর্যন্ত দুর্নীতিতে বাংলাদেশ ছিল শীর্ষে।
পূর্বের চেয়ে বর্তমান সমাজ অনেক উন্নত হলেও নানা সামাজিক সমস্যা সমাজ জীবনকে জটিল করে তুলেছে।
দুর্নীতি যেহেতু শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও দুর্নীতি দেখা যায়। সেহেতু মহানবীর (সাঃ) আদর্শ ইসলাম দুর্নীতির সরলীকৃত ব্যাখ্যা না দিয়ে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলেছে আর অন্যায় সম্পর্কে বলেছে, “তোমার অন্তর যে বিষয়ে কষ্ট পায় সে বিষয়টিই অন্যায় আর যে বিষয়ে অন্তর খুশি হয় তাই ন্যায়।”-আল হাদীস। এখানে অন্তরকে বিবেকের প্রতিবিম্ব হিসেবে তুলে ধরা হচেছ। আর বিবেক সম্পর্কে বলা হচ্ছে, “আমি তার অন্তরে ইলহাম (intuition) সৃষ্টি করে দিয়েছি কোনটি পাপ আর কোনটি খোদাভীরুতা” আল-কোরআন। ‘তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায় ভাবে ভক্ষণ করো না।’- সূরা বাকারা-১৮৮
মহানবী (সাঃ) আদর্শ অতীতে দুর্নীতি বন্ধে যে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছিল বর্তমানেও দুর্নীতি প্রতিরোধে সে আদর্শ কার্যকর করলে সাফল্য নিশ্চিত আসবেই আসবে। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা হবেই হবে। ইনশাল্লাহ
বিষয়: বিবিধ
১২৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন