কয়েকটি ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর-১১
লিখেছেন লিখেছেন কাঁচা পত্তের রস ০২ মে, ২০১৫, ০৩:১০:২৮ দুপুর
ইসলমিক জীবন আমরা সবাই চাই। তাই জানতে হবে ইসলামিক নিয়ম। আজ ১১তম পর্বে যে প্রশ্নত্তোর গুলো আমরা দেখব সেগুলো হলো:
# মহিলাদের জন্য পর্দা করা উত্তম, নাকি তা ফরয?
# বেগানা মহিলা দেখা হারাম। কিন্তু টিভি ইত্যাদির পর্দায় বা ছাপা কাগজে তার ছবিও দেখা কি হারাম?
# আপন মামাত, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোন, চাচী, মামি, স্ত্রীর বোন বা ভাবীর সাথে মুসাফাহাহ বৈধ কি?
# মহিলাদের চাকুরী করা কি বৈধ?
# চিকিৎসার জন্য কি বেপর্দা হওয়া বৈধ?
প্রশ্ন: মহিলাদের জন্য পর্দা করা উত্তম, নাকি তা ফরয?
উত্তর: মহিলাদের জন্য পর্দা করা ফরয। করলে উত্তম, না করলেও চলে---এমন নয়। আর পর্দা বলতে চেহারা ঢাকা পর্দা। মহানবী (সঃ)এর যুগে পর্দায় মহিলাদের চেহারা ঢাকার ব্যাপারে দুই শ্রেণীর আমল ছিল। পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পরে সকলেই চেহারা ঢেকে পর্দা করত। কোন কোন হাদীসে চেহারা না ঢাকার যে বর্ণনা পাওয়া যায়, তা পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বেকার। ৪৯৭ (ইবনে উষাইমীন)
প্রশ্ন: বেগানা মহিলা দেখা হারাম। কিন্তু টিভি ইত্যাদির পর্দায় বা ছাপা কাগজে তার ছবিও দেখা কি হারাম?
উত্তর: বেগানা মহিলার প্রতি তাকিয়ে দেখতে নিষেধ যে কারণে করা হয়েছে, সে কারণে তার ছবি দেখাতেও রয়েছে। তাছাড়া মহান আল্লাহ বলেছেন, “বিশ্বাসীদেরকে বল, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের যৌন অঙ্গকে সাবধানে সংযত রাখে; এটিই তাদের জন্য অধিকতর পবিত্র। ওরা যা করে, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে অবহিত।” (নূরঃ ৩০)
এ নির্দেশ জীবিত, মৃত মূর্তি বা ছবি সর্ব প্রকার মহিলা দেখার ব্যাপারে ব্যাপক। ৪৯৯ (ইবনে বায)
প্রশ্ন: আপন মামাত, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোন, চাচী, মামি, স্ত্রীর বোন বা ভাবীর সাথে মুসাফাহাহ বৈধ কি?
উত্তর: যার সাথে পুরুষের কোন কালে বিবাহ বৈধ, তার সাথে মুসাফাহাহ করা অথবা তার চেহারা দেখা বৈধ নয়। কাপড় বা কভারের উপরেও তার হাত ধরে মুসাফাহাহ হারাম। মহিলা বুড়ি অথবা পুরুষ বুড়ো হলেও আপোষের মুসাফাহাহ নাজায়েয। বায়াআতের সময় মহানবী (সঃ) কোন মহিলার হাত স্পর্শ করতেন না, ৫০০ (আহমাদ ২৬৪৬৬, বুখারী ৫২৮৮, মুসলিম ১৮৬৬, নাসাঈ ৪১৮১, ইবনে মাজাহ ২৮৭৪)
পরন্ত তিনি বলেছেন, “যে মহিলা (স্পর্শ করা) হালাল নয়, তাকে স্পর্শ করার চেয়ে তোমাদের কারো মাথায় লোহার সুচ গেঁথে যাওয়া অনেক ভাল।” ৫০১ (ত্বাবারানী, শাহীহুল জামে ৫০৪৫ নং)
বলা বাহুল্য, মহিলার জন্য তার মামাতো, খালাতো, চাচাতো ফুফাতো ভাই, ফোফা, খালু, স্বামীর ভাই (দেওর), বুনাই বা নন্দাইয়ের সাথে মুসাফাহাহ করা বৈধ নয়।
প্রশ্ন: মহিলাদের চাকুরী করা কি বৈধ?
উত্তর: বৈধ কর্ম ক্ষেত্রে মহিলাদের চাকুরী করা বৈধ। শর্ত হল, সে কর্ম ক্ষেত্র কেবল মহিলাদের জন্য খাস হবে। পুরুষ মহিলা একই স্থলে কর্ম হলে, সে চাকুরী বৈধ নয়। যেহেতু তাতে ফিতনা আছে। নারী মোহিনী ও আকর্ষণময়ী। মহানবী (সঃ) আর বলেছেন, “ আমার গত হওয়ার পরে পুরুষের পক্ষে নারীর চেয়ে অধিক ক্ষতিকর কোন ফিতনা অন্য কোন কিছু ছেড়ে যাচ্ছি না।” ৫০৩ (আহমাদ, বুখারী ৫০৯৬, মুসলিম ২৭৪০ নং, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)
সুতরাং পরপুরুষ থেকে যথা সম্ভভ দূরে থাকতে হবে মহিলাকে। নামাযের কাতারের ব্যাপারে তিনি বলেন, “পুরুষদের শ্রেষ্ঠ কাতার হল প্রথম কাতার এবং নিকৃষ্ট কাতার হল সর্বশেষ কাতার। আর মহিলাদের শ্রেষ্ঠ কাতার হল সর্বশেষ কাতার এবং নিকৃষ্ট কাতার হল প্রথম কাতার।” ৫০৪ (আহমাদ, মুসলিম ৪৪০, সুনান আরবাআহ, মিশকাত ১০৯২ নং)
বলা বাহুল্য যে, নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার মিশ্র প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ও চাকরি মুসলিম মহিলার জন্য বৈধ নয়। ৫০৫ (ইবনে উষাইমীন)
প্রশ্ন: চিকিৎসার জন্য কি বেপর্দা হওয়া বৈধ?
উত্তর: মহিলার চিকিৎসার জন্য প্রথমতঃ মহিলা ডাক্তার খোঁজা জরুরী। না পাওয়া গেলে পুরুষ ডাক্তারের কাছে স্বামী ও কোন মাহরামের উপস্থিতিতে চিকিৎসা করানো জরুরী। মহিলা ডাক্তার থাকতে পুরুষ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করানো হারাম। যেমন পুরুষ ডাক্তারের কাছে প্রয়োজনীয় অঙ্গ ছাড়া অন্য অঙ্গ প্রকাশ করা অবৈধ।
উত্তর দিয়েছেন: আব্দুল হামীদ ফাইযী, বাংলা হাদিস (মহিলা ও পর্দা)
পূর্বের পর্বগুলো- কয়েকটি ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর-১০
বিষয়: বিবিধ
২৭৩৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
স্বামীর সংসার স্বামীর অবর্তমানে হেফাজত করা আল্লাহর হেফাজতের মাধ্যমে একজন নারীর জন্য শরিয়ত মোতাবেক কর্তব্য , এখানে সে যদি চাকরি করতে যায় এবং তার চাকরির সময় ও স্বামীর চাকরির সময় মিলে যায় - তাহলে সে কিভাবে স্বামীর সংসারের হেফাজত করবে ?
কোন প্রতিষ্ঠান কি অনুমোদন করবে তারই কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে তাদেরই সময়ে অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানে তাদের কাজ ফেলে রেখে কাজ করতে দিতে ?
এরকম কি কোন প্রতিষ্ঠান করে বা এরকম উদারতা কি কোন এমপ্লয়ি তার এমপ্লয়ারের কাছে এসপেক্ট করতে পারে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন