কয়েকটি ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর -৯

লিখেছেন লিখেছেন কাঁচা পত্তের রস ২২ মার্চ, ২০১৫, ০৯:২৬:৪৩ রাত



ইসলমিক জীবন আমরা সবাই চাই। তাই জানতে হবে ইসলামিক নিয়ম। আজ ৯ম পর্বে যে প্রশ্নত্তোর গুলো আমরা দেখব সেগুলো হলো:

*কাজের চাপে সময় পার করে নামায পিছিয়ে দেয়া কি বৈধ?

*নামাযে শৈথিল্য বা ঢিলেমি করা অথবা নামাযকে ভারী মনে করা কাদের কাজ?

*আমার রাত্রে শুতে দেরি হয়। ডিউটি শুরু হয় সকাল সাতটা থেকে। ফজর হয় চারটায়। ফজরের সময় উঠে জামায়াতে নামায পড়লে এবং তারপর শুলে আর ঘুম হয় না। সুতরাং আমি যদি ডিউটি শুরুর এক ঘণ্টা আগে এলার্ম লাগিয়ে শুই এবং ডিউটিতে যাবার আগে ফজরের নামাযটা পরে নেই, তাহলে কি যথেষ্ট হবে না?


প্রশ্ন: কাজের চাপে সময় পার করে নামায পিছিয়ে দেয়া কি বৈধ?

উত্তর: নিজের কাজ বা সৃষ্টির কাজ আগে করা এবং স্রষ্টার কাজ পিছিয়ে দেয়া বৈধ হতে পারে না। মহান আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয় নামাযকে বিশ্বাসীদের জন্য নির্ধারিত সময়ে অবশ্য কর্তব্য করা হয়েছে। (নিসাঃ ১০৩)

যুদ্ধ চলাকালেও নামায পিছিয়ে না দিয়ে “সালাতুল খাওফ” পড়ার নির্দেশ আছে। সুতরাং কাজের ফাঁকেই নামায আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা রাখা জরুরী। কাজের কাপড় নোংরা হলেও পৃথক কাপড় রেখে নামায পড়তে হবে। মাঠে-ময়দানে ভিজে জায়গায় দাঁড়িয়েও নামায পরে নিতে হবে। একান্ত কেউ নিরুপায় হলে সে কথা ভিন্ন। যেমন রোগী ও মুসাফির জমা তাকদীম বা তা’খির করতে পারে। বৃষ্টির জন্যও জমা তাকদীম হতে পারে।

প্রশ্ন: নামাযে শৈথিল্য বা ঢিলেমি করা অথবা নামাযকে ভারী মনে করা কাদের কাজ?

উত্তর: নামাযে শৈথিল্য বা ঢিলেমি করা অথবা নামাযকে ভারী মনে করা মুনাফিকদের কাজ। মহান আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় মুনাফিক (কপট) ব্যক্তিরা আল্লাহকে প্রতারিত করতে চায়। বস্তুতঃ তিনিও তাঁদেরকে প্রতারিত করে থাকেন এবং যখন তাঁরা নামাযে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে নিছক লোক দেখানোর জন্য দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে তাঁরা অল্পই স্মরণ করে থাকে।” (নিসাঃ ১৪২)

“আর তাদের দান খয়রাত গ্রহণযোগ্য না হওয়ার কারণ এ ছাড়া আর কিছুই নয় যে, তাঁরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে কুফরী করেছে, আর তাঁরা নামাযে শৈথিল্যের সাথেই উপস্থিত হয় এবং তাঁরা অনিচ্ছাকৃতভাবেই দান করে থাকে।” (তাওবাহঃ ৫৪)

আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) বলেন, “মুনাফিকদের পক্ষে সবচেয়ে ভারী নামায হল এশা ও ফজরের নামায। ঐ দুই নামাযের কি মাহাত্ন্য আছে, তা যদি তাঁরা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও অবশ্যই তাতে উপস্থিত হত। আমার ইচ্ছা ছিল যে, কাউকে নামাযের ইকামত দিতে আদেশ দিই, অতঃপর একজনকে নামায পড়তেও হুকুম করি, অতঃপর এমন একদল লোক সঙ্গে করে নিই; যাঁদের সাথে থাকবে কাঠের বোঝা। তাদের নিয়ে এমন সম্প্রদায়ের নিকট যাই, যারা নামাযে হাজির হয় না। অতঃপর তাদেরকে ঘরে রেখেই তাদের ঘরবাড়িকে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিই।” ১৪৩ (বুখারী ৬৫৭, মুসলিম ৬৫১ নং)

প্রশ্ন: আমার রাত্রে শুতে দেরি হয়। ডিউটি শুরু হয় সকাল সাতটা থেকে। ফজর হয় চারটায়। ফজরের সময় উঠে জামায়াতে নামায পড়লে এবং তারপর শুলে আর ঘুম হয় না। সুতরাং আমি যদি ডিউটি শুরুর এক ঘণ্টা আগে এলার্ম লাগিয়ে শুই এবং ডিউটিতে যাবার আগে ফজরের নামাযটা পরে নেই, তাহলে কি যথেষ্ট হবে না?

উত্তর: না, সময় পার করে নামায পড়া যথেষ্ট নয়। ইচ্ছাকৃত সময় পার করে নামায পড়লে তা নষ্ট করারই শামিল। বহু উলামার মতে এমন ব্যক্তি ‘কাফের’ হয়ে যাবে। ১৪২(ইবনে বায)

যে নামাযীরা সময় পার করে নামায পড়ে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের ‘গাই’ উপত্যকা। মহান আল্লাহ বলেন, “তাদের পর এল অপদার্থ পরবর্তীগণ তাঁরা নামায নষ্ট করলে ও প্রবৃত্তিপরায়ণ হল; সুতরাং তাঁরা অচিরেই ‘গাই’ প্রত্যক্ষ করবে।” (মারয়্যামঃ ৫৯)

নামায বিনষ্ট করার অর্থেঃ একেবারে নামায না পড়া; যা মূলতঃ কুফরী, অথবা নামাযের সময় বিনষ্ট করা; যার অর্থ সঠিক সময়ে নামায আদায় না করা, যখন ইচ্ছা পড়া বা বিনা ওযরে দুই বা ততোধিক নামাযকে একত্রে পড়া, অথবা কখনো দুই, কখনো চার, কখনো এক, কখনো পাঁচ অক্তের নামায পড়া। এ সমস্ত নামায বিনষ্ট করার অর্থে শামিল।

উত্তর দিয়েছেন: আব্দুল হামীদ ফাইযী, বাংলা হাদিস (নামাজ, নামায, সলাত)

পূর্বের পর্বগুলো একসাথে- কয়েকটি ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর

বিষয়: বিবিধ

১৫৬৯ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

310537
২২ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:০৩
হতভাগা লিখেছেন : নামাজের কাযা আছে কি ? ভীষন অসুস্থ থাকলে মানে অচেতন থাকলে নামাজের কি হবে ?
০৫ মে ২০১৫ সকাল ০৯:০১
259501
কাঁচা পত্তের রস লিখেছেন : এই লিংকটি দেখতে পারেন।

কাযা নামাযের বিধি-বিধান
http://www.bideshbangla24.com/index.php?option=com_content&id=13692:2014-12-18-04-02-49
310619
২৩ মার্চ ২০১৫ সকাল ১১:৩৭
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ লেখা।
২৬ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:৩৪
252330
কাঁচা পত্তের রস লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।Good Luck
310694
২৩ মার্চ ২০১৫ রাত ১১:১৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয়, দারুন লিখছেন, লিখতে থাকুন। জাযাকাল্লাহ খাইর
২৬ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:৩৫
252331
কাঁচা পত্তের রস লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই আবু জান্নাত ।Good Luck
২৬ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:৩৭
252332
কাঁচা পত্তের রস লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই আবু জান্নাত ।Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File