কয়েকটি ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর-৮
লিখেছেন লিখেছেন কাঁচা পত্তের রস ১২ মার্চ, ২০১৫, ০৯:১২:০২ রাত
ইসলমিক জীবন আমরা সবাই চাই। তাই জানতে হবে ইসলামিক নিয়ম। আজ ৮ম পর্বে যে প্রশ্নত্তোর গুলো আমরা দেখব সেগুলো হলো:
*দাড়ি রাখা কি সুন্নত, নাকি ওয়াজেব?
*দাড়ি কি মোটেই ছাঁটা চলবে না? নাকি সৌন্দর্যের জন্য এক মুঠির বেশি দাড়ি ছেঁটে ফেলা যায়?
*অনেক মহিলার ধারনা, লম্বা নখে সৌন্দর্য আছে। সুতরাং নখ লম্বা ছেড়ে রাখায় কোন দোষ আছে কি?
*শোনা যায়, ‘মোছের পানি হারাম।’ – একথা কি ঠিক?
*চুল নখ ইত্যাদি কেটে ফেলার পর তা দাফন করা কি বিধেয়?
প্রশ্ন: দাড়ি রাখা কি সুন্নত, নাকি ওয়াজেব?
উত্তর: দাড়ি রাখা সকল নবীর সুন্নত (তরীকা)। কিন্তু উম্মতের জন্য তা পালন করা ওয়াজেব। যেহেতু আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা দাড়ি বাড়াও আর মোছ ছোট কর, পাকা চুলে (কালো ছাড়া অন্য রঙ) খেযাব লাগাও এবং ইয়াহুদ ও নাসারার সাদৃশ্য অবলম্বন করো না।” (আহমাদ, সহীহুল জামে ১০৬৭ নং)
তিনি আরো বলেছেন, “মোছ ছেঁটে ও দাড়ি রেখে অগ্নিপূজকদের বৈপরীত্য কর।” (মুসলিম ২৬০ নং)
প্রশ্ন: দাড়ি কি মোটেই ছাঁটা চলবে না? নাকি সৌন্দর্যের জন্য এক মুঠির বেশি দাড়ি ছেঁটে ফেলা যায়?
উত্তর:নবী ﷺ– এর ব্যাপক নির্দেশ পালন করতে গিয়ে দাড়িকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া ভাল। যেহেতু তিনি যে দাড়ি ছাঁটতেন, তাঁর সহীহ দলীল নেই। তবে সাহাবীদের আমল থেকে বুঝা যায় যে, এক মুঠির অতিরিক্ত দাড়ি ছেঁটে ফেলা যায়।
প্রশ্ন: অনেক মহিলার ধারনা, লম্বা নখে সৌন্দর্য আছে। সুতরাং নখ লম্বা ছেড়ে রাখায় কোন দোষ আছে কি?
উত্তর:লম্বা নখে সৌন্দর্য নেই। অবশ্য বিকৃত পছন্দের অনেকের নিকট তা থাকতে পারে। কিন্তু শরীয়তে নখ লম্বা করার অনুমতি নেই। বরং মানুষের প্রকৃতি তা লম্বা রাখার বিরোধী। তাই চল্লিশ দিনের মাথায় তা কেটে ফেলতেই হবে। মহানবী ﷺ বলেছেন, “প্রকৃতিগত আচরণ পাঁচটি অথবা পাঁচটি কাজ প্রকৃতিগত আচরণ,
(১) খাতনা (লিঙ্গত্বক ছেদন) করা।
(২) লজ্জাস্থনের লোম কেটে পরিষ্কার করা।
(৩) নখ কাটা।
(৪) বগলের লোম ছিঁড়া।
(৫) গোঁফ ছেঁটে ফেলা।” (বুখারী ও মুসলিম)
আনাস (রাঃ) বলেন, ‘মোছ ছাঁটা’, নখ কাটা, নাভির নিচের লোম চাঁছা এবং বগলের লোম তুলে ফেলার ব্যপারে আমাদেরকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যাতে আমরা সে সব চল্লিশ দিনের বেশী ছেড়ে না রাখি। (মুসলিম ২৫৮ নং)
প্রশ্ন: শোনা যায়, ‘মোছের পানি হারাম।’ – একথা কি ঠিক?
উত্তর: যে পানিতে মোছ ডুবেছে, সে পানি প্রকৃতিগতভাবে ঘৃণ্য হতে পারে। তবে সে পানি পান করা হারাম, তা বলা যায় না। অবশ্য মোছ ছেঁটে ছোট করার নির্দেশ আছে শরীয়তে। আল্লাহ্র রাসুল ﷺ বলেছেন, “তোমরা দাড়ি বাড়াও, মোছ ছোট কর, পাকা চুলে (কালো ছাড়া অন্য) খেযাব লাগাও এবং ইয়াহুদ ও নাসারার সাদৃশ্য অবলম্বন করো না।” (আহমাদ, সহীহুল জামে ১০৬৭ নং)
তিনি আরও বলেছেন, “যে ব্যক্তি তাঁর মোছ ছাঁটে না, সে আমার দলভুক্ত নয়।”৬৯৬ (তিরমিযী ২৭৬২, সহীহুল জামে ৬৫৩৩ নং)
প্রশ্ন: চুল নখ ইত্যাদি কেটে ফেলার পর তা দাফন করা কি বিধেয়?
উত্তর: সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন উমার কর্তৃক এরূপ আমল বর্ণিত আছে। অনেক ফুকাহাও তা মুস্তাহাব মনে করেন। (ইবনে উষাইমীন) আর এ কথা বিদিত যে, বহু যাদুকর তা দিয়ে যাদুও করে থাকে। সুতরাং সতর্কতাই বাঞ্ছনীয়।
উত্তর দিয়েছেন: আব্দুল হামীদ ফাইযী, বাংলা হাদিস (সাজসজ্জা ও প্রসাধন)
পূর্বের পর্বগুলো একসাথে- কয়েকটি ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর
বিষয়: বিবিধ
২৭৩২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ।
এব্যাপারে একটু বিস্তারিত জানতে চাই। রেফারেন্স সহ। জাযাকাল্লাহ খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন