কয়েকটি ইসলামিক প্রশ্ন ও উত্তর-২

লিখেছেন লিখেছেন কাঁচা পত্তের রস ১১ জানুয়ারি, ২০১৫, ১১:৫২:৪৯ রাত



আজ কয়েকটি প্রশ্নোত্তর থাকবে মূলত বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে। আসলে বিভিন্ন দিবস পালন কতটা যুক্তিযুক্ত তা তুলে ধরব।

কেক কেটে, মোমবাতি নিভিয়ে বার্থ-ডে বা জন্মদিন পালন করা কি ঠিক?

বার্থ-ডে বা জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী পালন করা সুন্নত। তবে সেই সুন্নত [অর্থাৎ ইহুদি নাসারাদের সুন্নত মুসলিমদের নয়], যার জন্য মহানবী (সঃ) বলেছেন, “অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির সুন্নত [ইহুদি নাসারাদের] (তারিকা) অনুসরণ করবে বিঘত বিঘত এবং হাত হাত পরিমাণ (সম্পূর্ণরূপে)। এমনকি তাঁরা যদি সাণ্ডার (গোসাপ জাতীয় এক প্রকার হালাল জন্তুর) গর্তে প্রবেশ করে, তবে তোমরাও তাকে অনুসরণ করবে (এবং তাঁদের কেও যদি রাস্তার উপর প্রকাশ্যে স্ত্রী-সঙ্গম করে তবে তোমরাও তা করবে!)” সাহাবাগণ বললেন, “আল্লাহ্‌র রাসূল ইয়াহুদ ও খ্রিস্টানরা?” তিনি বললেন, “তবে আবার কারা?” ৯৪ (বুখারী, মুসলিম ও হাকেম)

বলা বাহুল্য, বিজাতীর অনুকরণে এমন উৎসব বা অনুষ্ঠান পালন করা বৈধ নয়। যেহেতু মহানবী (সঃ) বলেন, “ যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুরূপ অবলম্বন করে, সে তাঁদেরই দলভুক্ত।” ৯৫ (আবূ দাঊদ, ইবা)

একই পর্যায় পড়েঃ ভালবাসা দিবস, মাতৃ দিবস ইত্যাদি।

ঈদে মীলাদুন নাবী বিদআত কেন?

যেহেতু শরীয়তে তাঁর কোন দলীল নেই। খোদ নবী (সঃ) বা তাঁর কোন সাহাবী, কোন তাবেঈ বা ইমাম তা পালন করে যাননি, করার নির্দেশও দেননি।

সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদ (নাবীদিবস) আবিষ্কার করেন ইরাকের ইরবিল শহরের আমীর (গভর্নর) মুযাফফারুদ্দীন কূকুবুরী ঠিক হিজরী সপ্তম শতাব্দীর গোড়ার দিকে ৬০৪ (মতান্তরে ৬২৫) হিজরীতে। মিসরে সর্বপ্রথম চালু করে ফাতেমীরা; যাঁদের প্রসঙ্গে ইবনে কাসীর বলেন, “(ফাতেমী শাসকগোষ্ঠী) কাফের, ফাসেক, পাপাচার, ধর্মধ্বজী, ধর্মদ্রোহী, আল্লাহ্‌র সিফাত (গুণাবলী) অস্বীকারকারী ও ইসলাম অস্বীকারকারী মাজূসী ধর্ম-বিশ্বাসী ছিল।” ৮৮ (আল-বিদায়াহ অন-নিহায়াহ ১১/৩৪৬)

অনেকে বলেছেন, মীলাদে মোস্তফা একটি নব্য আবিষ্কার; যা আজ থেকে প্রায় বারো শত বছর পূর্বে হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষভাগে শায়খ উমার বিন মুহাম্মাদ সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেন। মাওসেলের অধিবাসী উক্ত উমার বিন মুহাম্মাদ নাকি খুবই আশেকে রাসুল ও আল্লাহ্‌র অলী ছিলেন। তিনি রাসুল (সঃ)এর ভালবাসায় একান্ত অনুরাগের বশে এ মীলাদ তথা রাসুল (সঃ) এর জন্ম-বৃত্তান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় ব্রতী হন। বিখ্যাত সীরাতে শামী গ্রন্থে এ কথা স্বীকার করা হয়েছে। ৮৯ (দেখুনঃ ছহীহ মাকছূদে মুমেনীন ৩৬৯ পৃঃ)

তাছাড়া এতে রয়েছে বিজাতির অনুকরণ এবং শরীয়ত-বিরোধী বহু কর্মকাণ্ড। ৯০ (‘বারো মাসে তেরো পরব’ দ্রঃ)

‘ঈদে মীলাদুন নাবী’ (নবী দিবস) পালন করা বৈধ নয় কেন?

মহান আল্লাহ আমাদের দ্বীন ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ করে দিয়েছেন তাঁর নবীর জীবদ্দশাতেই। মহান আল্লাহ বলেন, “আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ (নেয়ামত) সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের ধর্মরূপে মনোনীত করলাম।(সূরা মায়েদাহ ৩ আয়াত)

আর মহানবী (সঃ) বলেন, “ যে ব্যক্তি আমাদের এ (দ্বীন) ব্যপারে নতুন কিছু আবিষ্কার করে, সে ব্যাক্তির সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।” ৯১ (বুখারী ও মুসলিম) “যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করে, যার উপর আমাদের কোন নির্দেশ নেই, সে ব্যক্তির সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।” ৯২ (মুসলিম)

ইসলামে পালনীয় ঈদ হল মাত্র দুটি; ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। তৃতীয় কোন ঈদ ইসলামে নেই। মহানবী (সঃ) নবুয়তের ২৩ বছর কাল নিজের জীবনে কোন বছর নিজের জন্মদিন পালন করে যাননি। কোন সাহাবীকে তা পালন করার নির্দেশও দেননি। তাঁর পূর্ববর্তী নবীদের জন্ম মৃত্যু উপলক্ষে কোন আনন্দ অথবা শোকপালন করে যাননি।

তাঁর পরবর্তীকালে তাঁর চারজন খলীফা তাদের খেলাফতকালে রাষ্ট্রীয়ভাবে অথবা একেকভাবে নাবীদিবস পালন করে যাননি। অন্য কোন সাহাবী বা আত্মীয়ও তাঁর প্রতি এত ভালবাসা ও শ্রদ্ধা থাকা সত্ত্বেও তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে শোক পালন করেননি। তাঁদের পরেও কোন তাবেঈ অথবা তাঁদের কোন একনিষ্ঠ অনুসারী অথবা কোন ইমাম তাঁর জন্ম কিংবা মৃত্যুদিন পালন করার ইঙ্গিত দিয়ে যাননি। সুতরাং তা যে নব আবিষ্কৃত বিদআত, তা বলাই বাহুল্য।

খ্রিস্টানরা আন্দাজে ২৫ শে ডিসেম্বর যীশু খ্রিস্টের জন্মোৎসব (মীলাদ, বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে) এবং তাঁদের পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তির জন্মদিন (বার্থডে) বড় আনন্দের সাথে পালন করে থাকে। মুসলিমরা তাঁদের মত আনন্দে মাতোয়ারা হওয়ার উদ্দেশ্য এই বিদআত ওদের নিকট হতেই গ্রহণ করে নিয়েছে। তাই এরাও ওদের মত নবীদিবস (ঈদে-মীলাদুন-নাবী) এবং পরিবারের সভ্যদের (বিশেষ করে শিশুদের) ‘হ্যাপি বার্থ ডে’র অনুষ্ঠান উদযাপন করে থাকে। অথচ তাঁদের রাসুল (সঃ) তাঁদেরকে সাবধান করে বলেন, “ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করে সে তাদেরই একজন।” ৯৩ (আবুদাঊদ)

উত্তর দিয়েছেন: আবদুল হামীদ ফাইযী-বাংলা হাদিস

বিষয়: বিবিধ

১৫২৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

300221
১২ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৫২

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 10348

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : ছাগলের পাঠশালা...............।
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২৩
243016
কাঁচা পত্তের রস লিখেছেন : ইসলামকে ভালকরে জানার চেষ্টা করো ভাল লাগবে।
300240
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৬:২২
কাহাফ লিখেছেন :

পবিত্র 'সুন্নত'শব্দ কে 'ইয়াহুদী-খ্রীস্টানদের সুন্নত' শব্দ বলে লেখনীর শুরুতেই প্রশ্নবিদ্ধ করলেন উপস্হাপনা!!
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২৪
243017
কাঁচা পত্তের রস লিখেছেন : মনে হয় মূল বিষয়টি নিয়ে মতামত দিলে ভাল হতো।Good Luck
300265
১২ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:১০
হতভাগা লিখেছেন : ইহুদী - খৃষ্টানদের মত আমাদের মুসলমান সমাজও এখন সপ্তাহের একটা বিশেষ দিনকে ইবাদত করার দিন হিসেবে পালন করে চলেছে । যেখানে সপ্তাহে ৩৫ বার পালন করা উচিত , সেখানে তারা মাত্র ১ বার পালন করে ।

ইসলামের মূলস্তম্ভের একটির বিকল্প অনুসন্ধান করে ।
১২ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৪০
243018
কাঁচা পত্তের রস লিখেছেন : ভাই আপনার সাথে একমত আমি। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামায আমাদের সকল মুসলমান নারী-পুরুষের জন্য ফরজ। আসলে আমরা নামায সর্ম্পকে খুব একটা সচেতন নই। নামায আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বর্পূন, আল্লাহ নামাযর গুরুত্ব আমাদের সকলকে বোঝার তৌফিক দান করুন।Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File