সে তিনি এবং আমি

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ অয়েজুল হক ০১ মার্চ, ২০১৫, ০৪:৫৮:৫৮ বিকাল

বেশ চমৎকার একটা শিরোনাম লিখেছি। আজকাল নিজের সবকিছুই কেমন চমৎকার মনে হয়। মনে করতে পারেন, আমি আজ ফুটবল খেলেছি অথবা ক্রিকেট কিংবা কোন একটা প্রোগ্রামে গান করেছি বা বক্তব্য দিয়েছি। আমার কাছে মনে হবে সব কিছুই চমৎকার হলো। চমৎকার খেললাম, গান করলাম, চমৎকার বক্তব্য দিলাম…. চমৎকার। সব মিলিয়ে আমি নেতা না হলেও নেতাদের গুনাবলী আমার ভেতর পয়দা হতে শুরু করেছে। নেতাদের সব কিছুই যেমন চমৎকার, সঠিক ও নির্ভূল তেমনি আমারও….!

দলের কথা বলি যে দল যখন ক্ষমতায় যায় তাদের আমলে তাদের দৃষ্টিতে দেশটা চমৎকার চলে। আহা দেশ, এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ চমৎকার চলছে।নেতাদের ভাষায় দেশটা খরস্রোতা নদীর স্রোতের মতো সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ যেন একটা লঞ্চ আর দেশের জনগন সে লঞ্চের যাত্রী। ভেসে চলা বাহনে প্রকৃতিপ্রেমী জনগন সারাক্ষন আনন্দে গান করে- ওরে নীল দরিয়া

পানি খাব পেট ভরিয়া।

দোষ হোক বা চমৎকার কোন গুন হোক এটা সত্য যে, আমরা কবির প্রত্যাশাকে অর্পূন রেখে কথায় বড় হয়েছি। আমরা বড় হয়েছি প্রতিহিংসায়। যারা পেপার পত্রিকা পড়েন, তারা দেয়াল পত্রিকা নামক এক ধরনের পত্রিকার খবরও জানবেন।বড় হাতে লেখা টানানো দেয়ালের মতো পত্রিকা। হাফিজুর আমাকে দেয়াল পত্রিকা দেখাতে এক সরকারী অফিসে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে আমি বলি, পত্রিকা কই!? হাফিজুর আমাকে বাথরুমের দিকে নিয়ে যায়।বাথরুমে ঢুকে আমি অবাক! চার দেয়াল ভরে লেখা। কত লেখা! আমি সামান্য র্বননা দেই।( উপর থেকে)

মল ত্যাগ করিবার সময় ধুমপান করিবেন না।– বিমল

বিমল একটা গাধা।

উপরের তিন শব্দ যে লিখিয়াছে সে একটা গরু- বিমল

আমি গরু না তুই গরু

ভাল উপদেশ যার সহ্য হয়না সে শুয়োরের চেয়েও নিকৃষ্ট।– বিমল

ওরে বিমল…….. ওরে …… এর বাচ্চা!

আমি আর সামনে অগ্রসর হতে পারছি না। অগ্রসর হওয়াটা সম্ভাবত ঠিকও হবেনা।দেয়াল ভরা লেখা দেখে একটা সম্পাদকীয় লিখতে ইচ্ছা হচ্ছিল! লেখা হয়নি।ছোট করে দু’এক লাইন এভাবে লিখলে হতো- লেখালেখির এ অদ্ভূত চর্চা দেখে আমি আবেগপ্লুত, অবাক বিস্ময়ে শুধু ভাবছি রবীন্দ্রনাথরা কেন এত বড় হলো!

একটা গল্প প্রতিযোগিতার কথা বলে শেষ করি তার আগে বলে নেই আমরাও সামনে একটা গল্প প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে যাচ্ছি- ‘ সে তিনি আর আমি!’ প্রতিযোগাতার শ্রেষ্ঠ গল্পকারের গল্প দিয়ে বানানো হবে টেলিফ্লিম!

১ ম প্রতিযোগীর গল্প- গাছে ওঠার এক প্রতিযোগিতা হচ্ছিল আমি ও ছিলাম সে প্রতিযোগিতায়। অনেক গুলো গাছ। কে কত দ্রুত উপরে উঠতে পারে। ব্যাস। প্রতিযোগিতা শুরু হলো। আমিও সবার সাথে উপরে উঠতে থাকি। আমি উঠছি সবার চেয়ে দ্রুত। কিছুক্ষন পর হঠাৎ করে খেয়াল করি গাছ রেখে আরও বিশ হাত উপরে উঠে এসেছি!

২ য় প্রতিযোগী- এই তোমার গল্প! শোনো আমার কাহিনী- একবার সিমেন্টের ব্যাগে পঞ্চাশ কেজি আটা নিয়ে বাড়ি ফিরছি। ব্যাগটা একটু ছেড়া ছিল। সেই ছেড়া দিয়ে সামান্য সামান্য করে আটা বেরুচ্ছিল। আমি শ্বাস টানি আর বিড়ির ধোয়ার মত আটা আমার নাকের মধ্যে যায়। শ্বাস টানি আর যায়। বাড়ি এসে দেখি ব্যাগে আটাই নেই। ওজন মেপে দেখি আমার ওজন পঞ্চাশ কেজি বেড়েছে।

র্দূভাগ্য ক্রমে আমি ছিলাম তৃতীয় প্রতিযোগী আমি আর কি বলি! বললাম ভাই আমি লেখক মানুষ, পালোয়ান নই। তবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গল্পটা এতদিন ইচ্ছা করেই লেখা হয়নি। কথা দিচ্ছি, আমার কলম আজ তা প্রসব করবে।

বিষয়: সাহিত্য

১৩০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File