জেদ্দার বৃষ্টি ও উস্তাজের কান্না
লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আমিনুল হক ১৬ নভেম্বর, ২০১৪, ০৮:৪১:১৬ রাত
গতকাল জোহরের নামাজের আগে আমার প্রিয় উস্তাজের ফোন পেলাম। রিসিভ করতেই বললেন জোহরের নামাজ পড়ে বাচ্চাদের সাথে একসাথে দুপুরের খাওয়া সেরে আমার বাসায় চলে এসো। কম্পিউটারে কিছু কাজ আছে, আমাকে হেল্প করতে হবে। আমি জোহরের নামাজ পড়ে খাওয়া দাওয়া সেরে উস্তাজের বাসায় রওয়ানা হলাম। ট্যাক্সি ক্যাবে উঠতেই দেখলাম চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। চারদিকে ধুলিঝড় বয়ে যাচ্ছে। আচ করতে পারছি এখনই অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত শুরু হবে। ট্যাক্সি থেকে নেমেই দ্রুত উস্তাজের বাসায় গেলাম। বাসা থেকে বউয়ের তৈরী করা নুডুলস নিয়ে গিয়েছিলাম উস্তাজের জন্য। উস্তাজতো রেগে তেলে বেগুন হয়ে গেলেন। প্রায় অনেকক্ষণ বকাঝকা করলেন। আমি কেন তার জন্য খাবার নিয়ে গেলাম এ কারনে। আমি তাঁর রাগ কমানোর জন্য কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। একদম বোকা বনে গেলাম। স্যারকে বললাম, এইবারের জন্য ক্ষমা করেন। সাথে রাসূল স. এর একটি হাদিস শুনিয়ে দিলাম- 'তোমরা একে অপরকে হাদিয়া দাও এবং পরস্পরে ভালবাস'।
ইতোমধ্যে ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু। উস্তাজ গেলেন বেডরুমের জানালা বন্ধ করতে আমি গেলাম আরেক রুমের জানালা বন্ধ করতে। জানালা বন্ধ করতে এসে আমি আর জানালা বন্ধ না করে সৌদি আরবের বৃষ্টি উপভোগ করছিলাম। দেখলাম উস্তাজও আমার পাশে এসে চুপচাপ দাড়িয়ে আছেন। এরপর তিনি শুরু করলেন দুয়া মুনাজাত। বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে তিনি শুধু দুয়া করছিলেন। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য। পরিবেশ ভারী হয়ে এলো। উস্তাজের চোখ দিয়েও শুরু হলো অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাত। আমিও যোগ দিলাম তার সাথে...........
কিছুক্ষণ পর উস্তাজ মুনাজাত শেষ করে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, আমিন তোমার সাথে একটু আগে রূঢ় আচরন করে ফেলেছি। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি বললাম, নো প্রবলেম। আমি কছিুই মনে করিনি। আমি এরকমই অভ্যস্ত.......
এরপর যা ঘটেছে তা আরো হৃদয়স্পর্শি। সে প্রসঙ্গ এখন থাকুক........
বিষয়: বিবিধ
১০৮০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লেখা ভাল লাগল ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য ।
রিয়াদে আমি যেখানে থাকি সেখানে বৃষ্টির লেশ মাত্রও দেখলাম না!
আবেগী উপস্হাপনার জন্যে জাযাকুমুল্লাহ জানাচ্ছি.....
মন্তব্য করতে লগইন করুন