জানি, এই পোস্টটি কোনো আলেম পড়বে না, পড়লেও বিরক্ত হবেন........

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আমিনুল হক ৩১ অক্টোবর, ২০১৪, ১১:০৮:২৬ সকাল

যাদের জন্য আমার এই লেখার অবতারনা তারা অনেকেই আমাদের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুঁ মারেন না। তাই বলা যায়, আমার এই পোস্ট টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের নজরে আসবে বলে মনে হয় না। তারপরও লিখতে ইচ্ছে করছে। কেননা তাদের অনুসারীদের কেউ না কেউ যদি লেখাটি পড়ে ফেলেন এবং তাদের মুরব্বীদের কাছে গিয়ে বলেন এই প্রত্যাশায়। আমি জানি আমার এই প্রত্যাশাও অরন্যে রোদন। তারপরও লিখছি...

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‌"তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে আকড়ে ধর, আর তোমরা বিচ্ছিন্ন হয়ো না"।

সারাবিশ্বে মুসলমানদের পতনের জন্য বেশ কিছু কারণ আছে। তার মধ্যে নিজেদের মধ্যে অনৈক্যকে আমরা বড় কারণ হিসেবে দেখতে পারি। আজকে মিশর, সিরিয়া, লিবিয়া, ফিলিস্তিন, ইরাক, আফগানিস্তানসহ গোটা মুসলিম বিশ্বের দিকে তাকান। দেখবেন তাদের বড় সমস্যা ছোট খাট ইস্যুর বাইরে বড় কিংবা জাতীয় ইস্যুতেও এক হতে পারেছে না মুসলিম নেতৃবৃন্দ। এর খেসারত গোটা মুসলিম বিশ্ব দিচ্ছে। মুসলিম নেতৃবৃন্দের এই ব্যর্থতার মাসূল গুণছে সাধারণ মুসলিম জনতা।

এবার আসি বাংলাদেশ প্রসংগে। বাংলাদেশের আলেম-উলামাও আজ শতধা বিভক্ত। তছলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেছিল আলেমগণ। ভেবেছিলাম, এই বুঝি সবাই একত্র হয়ে জাতীয় ইস্যুতে লড়বে। কিন্তু না। দেখলাম, জামাতকে বাদ দিয়ে প্রোগ্রামের কর্মসূচী দেয়া হলো। জামাতও একাকী কর্মসূচী দিল।

নানান দল, নানান মত থাকতে পারে। কিন্তু নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে, দ্বীন ইসলামের স্বার্থে কি আমরা সবাই একত্রিত হতে পারি না?

প্রফেসর গোলাম আযম মারা গেলেন। বিএনপি তারা নামাজে জানাজায় যায়নি। বিএনপির ভারত, আমেরিকা ভীতি আছে তাই তারা আযম সাহেবের জানাজায় উপস্থিত হয়নি। এটা মেনে নেয়া যায় কিন্তু অন্যান্য ইসলামী দল, পীর মাশায়েখরা তো যেতে পারতেন। এতে বাতেল শক্তি একটা ম্যাসেজ পেয়ে যেত যে, আলেমরা কিন্তু সবাই এক।

আল্লামা সাঈদীর ফাসির রায় হল গত ফেব্রুয়ারিতে। রায় শুনে সাধারণ আম জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ল। কিন্তু বড় বড় অনেক আলেম, পীর-মাশায়েখগণ একটি বিবৃতিও দিতে পারলেন না। সত্যি দু:খ জনক।

মুরতাদ লতিফ সিদ্দিকির ফাসির দাবীতে হরতাল দিতে গিয়েও বাংলাদেশের আলেমকূল অনৈক্যর কসারত করলেন। জামাতে ইসলামী এই হরতালে সমর্থন জানাতে পারেনি। আবার অনেক ইসলামী দল ফাসির দাবীতে মিছিল সমাবেশ করলেও হরতালের ব্যাপারে চুপ ছিল।

আমাদের দেশের অনেক আলেম আছেন যারা জামাত কর্মীদের রক্ত দেখলে উল্লাস করেন, আনন্দ বোধ করেন। আবার অনেক জামাত কর্মী আছেন যারা তাবলীগপন্থি, পীরপন্থিদের বিপদে উল্লাস করেন, হাতে তালি বাজান। সারা বছর এরা একে অপরের দোষ তালাশে ব্যস্ত।

আমাদের মনে রাখা উচিত- কাফেররা কিন্তু সবাই এক। ওরা কিন্তু কে জামাত, কে চরমোনাই, কে ছারছিনা, কে ফুলতলি কে কোন মাজহাবের এটা যাচাই করে না। ওরা দেখে কারা ইসলামের পক্ষের লোক। সকল ইসলামপন্থি ওদের শত্রু। আপনি যদি মনে করেন, জামাতকে ঘায়েল করলে আপনি সুখী হবেন এই ধারনা ভুল। বরং ওরা বড়টাকে আগে খতম করে আপনার দিকে এগিয়ে আসবে। ইসলামের পক্ষে যিনি মাথা উচু করবেন তার মাথা খতম করার জন্য গোটা ইসলাম বিরোধী শক্তি একাট্টা।

অতএব, ঐক্যবদ্ধ, ঐক্যবদ্ধ এবং ঐক্যবদ্ধ। এর বিকল্প কোনো রাস্তা নেই...................................

বিষয়: বিবিধ

১৫২৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

279925
৩১ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:২৩
কাহাফ লিখেছেন :
বিদ্যমান এই অবস্হা আল্লাহ নির্ধারিত! একে এড়ানো যাবে না কোন ভাবেই! ক্বেয়ামতের কাছা-কাছি সময়ে এমন হবেই! কোরান-হাদিস থেকে তাই বুঝা যায়! অতএব.....এতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিৎ মুমিনের!
(মন্তব্য কে আসলি মনে করার দরকার নাই।)
279933
৩১ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৩৬
মামুন লিখেছেন : খুব সুন্দর লিখেছেন! অসাধারণ অনুভূতি! ভালো লাগা রেখে যাচ্ছি।
279937
৩১ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১১:৪৭
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম লিখেছেন : আমি আপনার লেখাটা পড়েছি ।
আমি জামায়াত সম্পর্কে এতটুকু বলছি :
১. জামায়াতে ইসলামী কোন ইসলামী দল না ।
২. নির্বাচন কমিশন কোন ইসলামী দলকে নিবন্ধন দেয় না । আর এটা তার অর্গানোগ্রাম বহির্ভুত ।


২৬ তারিখ লতিফ সিদ্দিকির শাস্তির দাবিতে হরতাল ডাকা সঠিক হয়নি । কারণ :
১. হরতাল প্রতিবাধ করার ইসলামী পদ্ধতি নয় ।
২. ২৬ তারিখ ছিল হিজরী নববর্ষ । এই দিন বরকতময় দিন । এই দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে । বিস্তারিত জানতে আমার এই লেখা দেখুন : " সবাইকে হিজরী নববর্ষের শুভেচ্ছা ! স্বাগতম ১৪৩৬ হিজরী ! " http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/55738



জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়াহ । কিছু লোক জানাজার নামাজ পড়লেই জানাজার নামাজ পড়ার অধিকার বা মাইয়্যাতের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য পালন হয়ে যাবে । সুতরাং বিএনপির লোকরা নামাজ না পড়লেও ক্ষতি নেই । কারণ এতে ইসলাম ধর্মরে নিয়ম লংগন হয়নি ।


279976
৩১ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:১৫
আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
280009
৩১ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫২
সুশীল লিখেছেন : আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
৩১ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:২৮
223694
আফরা লিখেছেন : হি...হি..হি. সুশীল ভাইয়া ।
280015
৩১ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
ইঁচড়ে পাকা লিখেছেন : আল্লাহ আমাদেরকে তার দ্বীনের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন।
280031
৩১ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:০৪
নিরবে লিখেছেন : ভালো লাগলো মামু
280035
৩১ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:১৯
ডাহুকী লিখেছেন : সময় এসেছে ছোট ছোট মত পার্থক্য ভুলে ইসলামী দলগুলোর এক হওয়ার। লক্ষ্য থাকবে দ্বীন কায়েমের। লীগ বি এন পির কোান দরকার নাই। উভয়ের গুনগত কোন পার্থক্য আসলেই নাই।
280057
৩১ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৪৬
নির্বোধ১২৩ লিখেছেন : ধর্মের ভিতরে এত রকম ফেকরা (কেজামাত, কে চরমোনাই, কে ছারছিনা, কে ফুলতলি কে কোন মাজহাবের) থাকলে আর ঐক্যবদ্ধ হবার সুযোগ কোথায়? আর এতসব ফেকরা কারা তৈরী করে রেখেছে? নিশ্চয় বিধর্মী কাফেররা নয়, আমরাই?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File