বিশ্বায়ন বনাম তৃতীয় বিশ্ব আর্শিবাদ না অভিষাপ
লিখেছেন লিখেছেন জহুরুল ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:২৬:০৮ সকাল
বর্তমা যুগকে চিহ্নিত করা হয় মানব ইতিহাসের চতুর্থ যোগাযোগের বিপ্লবের যুগ হিসাবে।বিশ্বায়ন (globalization) পারষ্পরিক ক্রিয়া এবং আন্তঃসংযোগ সৃষ্টিকারী এমন একটি পদ্ধতি যা বিভিন্ন জাতির সরকার, প্রতিষ্ঠান এবং জনগণের মধ্যে সমন্বয় ও মিথস্ক্রিয়ার সূচনা করে। আর এর প্রধান সহায়ক শক্তি হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তি।বিশ্বায়ন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে রাষ্ট্রকেন্দ্রিক সংস্থাসমূহ বিশ্ব জুড়ে আন্তঃরাষ্ট্রীয় (অর্থনৈতিক , সামাজিক ও রাজনৈতিক ) সম্পর্ক গড়ে তোলে।
লিংক
আমি এখানে আলোচনা করব বিশ্বায়নের ফলে তৃতীয় বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা………
তৃতীয বিশ্ব:সাধারনত উন্নয়নশীল দেশকে তৃতীয় বিশ্ব হিসাবে ধরা হয়।(সংজ্ঞা নিয়ে বির্তক আছে)।
এটি পড়ুন
বিশ্বায়নের ফলে মুক্তবাজার অর্থনীতির সম্পর্ক অনেকটা সদূর প্রসারী।মুক্তবাজার অর্থনীতির ফলে সারাবিশ্বের বাজার ব্যবস্থা এখন সকলের কাছে উন্মক্ত হয়েছে।এ প্রতিযোগীতায় যার পণ্যের মান ভাল সে টিকে থাকছে আর অন্যরা ছিটকে পড়ছে।
মুক্তবাজার অর্থনীতি কি সেটা আগে বুঝতে হবে?
সমালেচনা করেছেন
সংক্ষেপে একদেশের পণ্যসামগ্রী অবাধে অন্যদেশে প্রবেশ করতে পারে কোর প্রকার সরকারী নিয়ন্ত্রন ছাড়াই উক্ত পণ্যসামগ্রী ক্রয়বিক্র করা হয়।
অর্থাৎ যেকোন দেশের পণ্য যে কোন দেশে বাধাহীনভাবে প্রবেশ করতে পারবে এবং ক্রেতারা যে পণ্য পছন্দ করবেন, তাই কিনবেন; এতে কোন বাধা তৈরী করা যাবে না। এই বাণিজ্যিক বিশ্বায়নকে অবাধ করার জন্য কোন দেশ তাদের নিজস্ব পণ্য উৎপাদনের জন্য কোন ভর্তুকি প্রদান করতে পারবেন না, নিজের দেশের রাষ্ট্রায়াত্ব কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে বেসরকারী মালিকানায় ছেড়ে দিতে হবে। এই কারনে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো উন্নত দেশগুলো সাথে প্রাতযোগিতায় টিকতে পারছে না।
বিশ্বায়ন হলো নব্য সাম্রাজ্যবাদ।আগে জমি দখল করা হত। এখন করা হয় বাজার।
কারন :
উন্নত দেশগুলো অর উন্নত হচ্ছে আর অনুন্নত দেশগুলো আরও অনুন্নত হচ্ছে শুধুমাত্র এই বিশ্বায়নের ফলে।যেমন ধরুন ,বাংলাদেশের বাজারে বিদেশী একটা কোম্পানী একচেটিয়া ব্যাবসা করবে বা করছে।কিভাবে ?সেই কম্পানীর পণ্য সারা বিশ্বে চলছে।তাই ওদের বিশাল পুজি আছে।এখন বাংলাদেশে মনে করেন একটা কম্পানি একক ব্যাবসা করছে একে না সরালে তারা ব্যাবসা করতে পারবে না।তাই এরা এদের উৎপাদন খরচ অথবা তারও কম রেটে দেশীয কম্পানীর চেয়ে ভাল পণ্য আপনার কাছে দিবে।স্বাভবতই আপনি ভাল পণ্য + সাথে দাম কম হলে তো আর ভাল ওই পণ্যটাই নিবেন।এভাবে একসময় বাজার দখল করবে এবং পরে যা লস করেছে তা সুদে আসলে তুলে নিবে।কিন্তু এত লস করার পরও বাজারে টিকে থাকতো কিভাবে?কারন তারা অন্যদেশে একচেটিয়া ব্যাবসা করছে ।সেখান থেকে লাভের অংশ এখানে দিয়ে ভারসাম্য ঠিক রাখবে।এভাবে বাংলাদেশের বাজার দখল করার পর আবার অন্য দেশে একই পলিসি প্রয়োগ করবে।এভাবেই তারা সারা বিশ্বে একক বাজার নিয়ন্ত্রন করছে।ফলে দেশীয় কোন কম্পানী প্রতিযোগীতায় টিকতে পারছে না।নিজের দেশে যখন নিজে ব্যাবসা করতে পারছে তখন বিদেশের বাজারে কিভাবে টিকবে?আপনী দেশের পন্য কয়টা ব্যাবহার করছেন?
একটি পর্যলোচনা:
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটি মূলত ধনী আর শোষক দেশগুলোর দরিদ্র দেশের বাজার দখলের কৌশল।
সমাজতাত্ত্বিকরা মনে করছেন, এ সেই উপনিবেশের নব্য রূপ। সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াস।
ধনিক-বণিকরা বুঝছেন বিশ্বায়ন হলো পণ্য আর পুঁজির অবাধ প্রবাহ।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর মৌলিক শিক্ষা-চাহিদা পূরণের জন্য ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারই যথেষ্ট, অন্যদিকে কেবল আমেরিকাতেই সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় প্রসাধন সামগ্রীর পেছনে। এটা কী করে মেনে নেওয়া সম্ভব?
আজকের পৃথিবীতে, গরিব দেশগুলোর খাদ্য, স্বাস্থ্য এবং পানি সমস্যা সমাধানের জন্যে তেরো বিলিয়ন মার্কিন ডলারই যথেষ্ট। অন্যদিকে কেবল ইউরোপে সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় আইসক্রিমের পেছনে। এও কি গ্রহণযোগ্য?
ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ফেদেরিকো মাইয়র এবং বিশ্বব্যাংকের (সাবেক) পরিচালক জেমস উলফেনসনের বলেছিলেন, ‘এটা মেনে নেওয়া অসম্ভব, যে পৃথিবী অস্ত্রের পেছনে বছরে আনুমানিক ৮০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে পারে সে কি-না প্রতিটি শিশুকে স্কুলে শিক্ষাদানের জন্য প্রয়োজনীয় ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার জোগাড় করতে পারে না।’
বিশ্বব্যাপী সামরিক খাতে ব্যয়ের মাত্র এক শতাংশ অর্থ দিয়ে পৃথিবীর প্রত্যেক শিশুকে ব্লাকবোর্ডের সামনে দাঁড় করানো সম্ভব।
বিশ্বায়ন মানুষের আধুনীক ইতিসের ঐতিহাসিক বাস্তাবতায় এখন আমাদের মত দেশ এবং জনগানের মাথার উপর ছড়ি ঘুরাইতাছে। মুলত আধুনীক যুগের আরাম্ভ এবং পুজী তার বিকাশকে নিশ্চিত করার জন্য উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ , নয়-উপনিবেশবাদ, লিবারেল অর্থনীতি, নিউ-লিবারেল অর্থনীতি, বিশ্বায়ণ ইত্যাদি ইত্যাদি হাবি-জাবি একটার পর একটা হাজির করতাছে।
কিছুটা সংগৃহীত এখান থেকে
সত্যিকারের বিশ্বায়ণের একটিমাত্র শর্ত আমি দিতে চাই, তা যদি সবাই মেনে নেয় তবে আমি বিশ্বায়ণকে মেনে নেব। শর্তটি হল সারা বিশ্বে মানুষের মুক্ত চলাচলের অধিকার দেয়া - কোন পাসপোর্ট ভিসা বা কোনরকমের শর্ত ছাড়া। বিশ্বায়ণের প্রবক্তারা কি তৈরী?
আর ও পড়ুন
বিশ্বায়ন : আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের টিকে থাকা
http://archive.ittefaq.com.b/index.php?ref=MjBfMDJfMDNfMTNfMV80XzFfMTYyMjI=
বিশ্বায়ন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে বিশ্ব!
http://www.bonikbarta.com/2014-09-07/news/details/13029.html
বিশ্বায়নের অর্থনীতি-অর্থনীতির বিশ্বায়ন, গরিবের তোষন না শোষণ
http://blog.bdnews24.com/cesar/103326/comment-page-1
যুদ্ধের বিশ্বায়ন
http://www.amaderbudhbar.com/?p=4566
বিষয়: আন্তর্জাতিক
২৬৫৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন